স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৭ অক্টোবর।। সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধাগুলি সহজ-সরল করে প্রত্যেক জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়াই একটি জনপ্রিয় সরকারের পরিচয়৷ রাজ্যের সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে সরকারি নিয়মাবলির সরলীকরণ করে তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷ আজ শনিবার খয়েরপুরের গীতবিতান কমিউনিটি হল-এ পঞ্চায়েত দফতর আয়োজিত মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর যোজনায় (গ্রামীণ) মেগা সচেতনতা শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে এ-কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর কথায়, সাধারণ মানুষ স্বনির্ভর হয়ে উঠলে একটি রাজ্য আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বনির্ভর যোজনা জনগণকে আর্থিক দিক দিয়ে আত্মনির্ভর করার পাশাপাশি রাজ্যের বিকাশকে এক নতুন দিগন্তে এগিয়ে নিয়ে যাবে৷ একই সঙ্গে নানা দিক থেকেও তাদের শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা নেবে৷ বিপ্লব দেব আরও বলেন, পূর্বতন সরকার সাধারণ মানুষকে স্বনির্ভর করার জন্য কোনওপ্রকার সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি৷ বর্তমান সরকার ত্রিপুরাকে আত্মনির্ভর করার জন্য বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনগণের সুবিধার্থে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচিগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে নিয়মাবলিগুলিকে সরলীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে৷ এক্ষেত্রে গ্রাম থেকে শহরে জাতি-ধর্ম-বর্ণ দলমত নির্বিশেষে ছোট-বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷
তাঁর কথায়, পূর্বে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হত ব্যবসায়ীদের৷ বর্তমানে দোকান-ভিটের মালিক এবং ব্যবসায়ী সকলের কথা বিবেচনা করে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার নিয়মাবলিতে সরলীকরণ আনা হয়েছে৷ এর ফলে ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীরা অতি সহজেই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণের সুবিধা পেতে পারেন৷ পাশাপাশি সমগ্র রাজ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিমার আওতায় আনতে সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে৷ এক্ষেত্রে বিমার প্রথম প্রিমিয়ামের কিস্তির এক হাজার টাকা পর্যন্ত রাজ্য সরকার বহন করবে৷ একই সঙ্গে এই কর্মসূচিতে ব্যবসায়ীদের জন্য পেনশন প্রকল্পের সুবিধার পাশাপাশি ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে জিএসটি রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্বের কথা তিনি উল্লেখ করেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব-কা সাথ সব-কা বিকাশ মূল মন্ত্রে সবাইকে এক দিশায় নিয়ে যেতে কাজ করছে সরকার৷ যুবাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে৷ বর্তমান রাজ্য সরকার সেই দিশাতেই কাজ করছে৷ রাজ্যের যুবারা পেশাদারী মনোভাব নিয়ে নিজেকে স্বনির্ভর করার পাশাপাশি অন্যদেরও রোজগারের ব্যবস্থা করে রাজ্যকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা নেবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন৷ তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে৷ বাংলাদেশের সাথে জলপথে যোগাযোগের মাধ্যমে আমদানি রফতানি শুরু হয়েছে যা কল্পনাতীত ছিল৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খুব শীঘ্রই সাব্রুমে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে৷ একই সঙ্গে সারুমে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ মঞ্জুরি, লজিস্টিক হাব গড়ে তোলার বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, এখন থেকে ত্রিপুরায় টিনের ছাউনি ঘর থাকা সত্বেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা পেতে পারবেন জনসাধারণ৷ অনুষ্ঠানে বিধায়ক রতন চক্রবর্তী বলেন, সমাজের প্রতিটি মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার পাশাপাশি জীবনে স্থিতিস্থাপকতা এবং জনসাধারণ যাতে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে তার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করছে৷
কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতি এবং লকডাউনের কারণে জনসাধারণের জীবনকে থেমে থাকতে দেয়নি কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার৷ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে স্বনির্ভরতার দিকে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে চলেছে৷ রাজ্যের অর্থনীতি সচল রাখতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷