শিক্ষিকাকে পুড়িয়ে খুন, ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ স্বজনরা

আগরতলা, ৩১ জানুয়ারি : বোনের হত্যার বিচার চাইতে ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হলেন এক বোন। ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর সিপাহীজলা জেলার মেলাঘরের মাস্টার পাড়ার শিক্ষিকা হৈমন্তী সিংহ বর্মনকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আগুনে পুড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মৃতার স্বামী মৃণাল কান্তি বর্মনকে মেলাঘর থানার পুলিশ এখনো গ্রেফতার করেনি।

জানা গিয়েছে, ১৪ বছর আগে রাজধানী আগরতলা শহরের যোগেন্দ্রনগরের বর্মন টিলার হৈমন্তী সিংহ বর্মনের সাথে মেলাঘর থানাধীন মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক মৃণাল কান্তি বর্মনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক অশান্তি চলছিল বলে অভিযোগ। প্রায় সময়ই হৈমন্তী সিংহ বর্মনের স্বামী মৃণাল কান্তি বর্মন, শাশুড়ি ঊষা রানী বর্মন, জা ঝুমা কর বর্মন এবং ভাসুর মানস বর্মন মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন চালাত। এই অত্যাচারের বিষয়টি নিয়ে ২০১৮ সালে মেলাঘর থানাতে একটি অভিযোগ জানানো হয়েছিল।

গত ২০ ডিসেম্বর হৈমন্তী সিংহ বর্মনের শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আগুনে তাঁর দেহের ৯৭ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হৈমন্তী সিংহ বর্মনের পরিবারের পক্ষ থেকে মেলাঘর থানায় তাঁর স্বামী মৃণাল কান্তি বর্মন, ভাসুর মানস বর্মন, জা ঝুমা কর বর্মন এবং শাশুড়ি উষা রানী বর্মনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়।

অভিযোগ, মেলাঘর থানার ওসি দেবাশীষ সাহা এই এফআইআর গ্রহণ করতে ৪ দিন সময় লাগান। প্রথম থেকেই তিনি এই মামলা নিয়ে তালবাহানা শুরু করেন বলে অভিযোগ। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মহলের চাপে পড়ে মেলাঘর থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু করে এবং মৃতা হৈমন্তী সিংহ বর্মনের ভাসুর মানস বর্মনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু এই মামলায় মূল অভিযুক্ত মৃতার স্বামী মৃণাল কান্তি বর্মনকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। অভিযুক্ত পলাতক বলে জানানো হচ্ছে। অথচ অভিযুক্তকে মেলাঘরের মাস্টারপাড়া এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার এবং উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের দাবিতে শুক্রবার মৃতার বোন ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হন। এদিন মৃতার বোন জানান, পুলিশ তালবাহানা শুরু করেছে বলেই তারা বাধ্য হয়ে মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। এদিন ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে মৃতার বোনকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?