আগরতলা, ২৩ আগস্ট : বায়ুসেনার এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে দক্ষিণ ত্রিপুরা ও গোমতী জেলার বন্যা পরিস্থিতি দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। শুক্রবার সকালে আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে চড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাথে ছিলেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। দক্ষিণ ত্রিপুরা ও গোমতী জেলার বিভিন্ন বন্যা প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখেন। পরে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সাথে কথা বলে ত্রাণ সরবরাহ ও বিতরণ নিয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ এই বিপর্যয়ে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ৪৫০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে এবং তাতে প্রায় ৬৫ হাজার ৪০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে শিবিরগুলিতে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী যেমন- খাবার প্যাকেট, পানীয়জল এবং ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে। গ্রামোন্নয়ন, জলসম্পদ, বিদ্যুৎ, আরক্ষা, আধাসামরিক বাহিনী, অগ্নিনির্বাপক ইত্যাদি দপ্তরের অফিসার এবং কর্মীরা গত ৪ দিন ধরে বন্যা বিধ্বস্ত জনগণের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যে নিয়োজিত রয়েছেন।
প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে এখন পর্যন্ত পরিকাঠামো এবং কৃষি ফসল সহ বাড়িঘর এবং গবাদি পশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে বিদ্যুৎ দপ্তরের ৮৪৪টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে, ১৫ ১টি ট্রান্সফরমার, ৩১০ কিমি কন্ডাক্টরস এবং ২টি সাব-স্টেশন সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের ২ হাজার ৩২টি স্থানে ভূমিধুসের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৭৮-৯টি স্থানে ভূমিধুস পরিষ্কার করা হয়েছে এবং বাকি জায়গাগুলির ভূমিধস সরানোর কাজ পুরোদমে চলছে।
জানা গিয়েছে, ১ হাজার ৯৫২টি স্থানে রাস্তা ভেঙে পড়েছে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫৭৯টি স্থানে পুনরুদ্ধারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ধূৎসস্তূপ পরিষ্কার করার জন্য রাজ্যজুড়ে মোট ১৫৩টি ড্রজার কাজে লাগানো হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পূর্ত দপ্তরের প্রায় ২০০ জন ইঞ্জিনিয়ার দিনরাত কাজ করে চলছেন। রাজ্যের ৮টি জেলায় বন্যার কারণে খারিফ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা যাচ্ছে যে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর সব্জি ক্ষেত এবং ১ লক্ষ ২০ হাজার হেক্টর ধানের জমি এখনও জলের তলায় রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন শহর এলাকায় বন্যা দূর্গতদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ৬৫টি শিবির খোলা হয়েছে। এই শিবিরগুলোতে ৭ হাজার ২৩২টি পরিবারের ২৮ হাজার ৯৯৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন।