কুমারঘাট, ২ জুলাই।। ত্রিপুরায় স্বাস্থ্য হাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। এজন্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সর্বত্র ঢেলে সাজানো হচ্ছে। আজ কুমারঘাট মহকুমার কাঞ্চনবাড়িতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং প্রাণী চিকিৎসালয় ও গো-প্রজনন কেন্দ্রের নবনির্মিত পাকা ভবনের উদ্বোধন করে এক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। দুটি নবনির্মিত ভবনের দ্বারোদঘাটনের পর কাঞ্চনবাড়ি মোটরস্ট্যান্ডে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা ছাড়াও বক্তব্য রাখেন প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক অধিকারের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস এবং প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা বি কে দাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস। উপস্থিত ছিলেন কুমারঘাট পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সুমতি দাস, জিলা পরিষদের সদস্য নীলকান্ত সিনহা, জেলাশাসক ডি কে চাকমা, পুলিশ সুপার কান্তা জাঙ্গির, উনকোটি জেলার সিএমও ডা. শীর্ষেন্দু চাকমা প্রমুখ। উল্লেখ্য, কাঞ্চনবাড়িতে ৪.৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তথা আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দিরের নবনির্মিত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কাঞ্চনবাড়ি প্রাণী চিকিৎসালয় ও কৃত্রিম গো-প্রজনন কেন্দ্র নির্মানে ৮২ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, কাঞ্চনবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রর নতুন ভবন হওয়ায় এই অঞ্চলের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটি এলাকার ২৯ হাজারের বেশি মানুষ এখন থেকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পাবেন। রাজ্যের মানুষকে যাতে চিকিৎসার জন্য বহিরাজ্যে যেতে না হয় সেজন্য চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
রাজ্যের প্রধান হাসপাতাল এজিএমসি অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় নতুন নতুন বিভাগ চালু করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থাও এই হাসপাতালে চালু করা হবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই আইজিএম হাসপাতালে ৫০ আসন বিশিষ্ট ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। আইজিএম হাসপাতালে ২০ আসনের ডিএনবি কোর্স চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ২০টি আসনের মধ্যে ৪টি শিশু বিভাগ, ৪টি চক্ষু বিভাগ, ৬টি প্রিভেনটিভ মেডিসিন ও ৬টি স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগের আসন থাকবে। এই আসনগুলির মধ্যে ৫০ শতাংশ আসন থাকবে ত্রিপুরার ছেলেমেয়েদের জন্য।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য হলো পরিকাঠামো উন্নয়নের মধ্য দিয়ে রাজ্যের সামগ্রিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করা। কাঞ্চনবাড়িতে উন্নত প্রাণী চিকিৎসালয় ও গো-প্রজনন কেন্দ্র গড়ে উঠায় এই অঞ্চলের প্রাণীপালকগণ প্রাণী চিকিৎসা ও কৃত্রিম পদ্ধতিতে গো-প্রজননের সুবিধা পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে প্রাণীপালনের ভূমিকা অপরিসীম। ত্রিপুরার গ্রামাঞ্চলে অনেক পরিবার দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনুষ্ঠান প্রাণীসম্পদ বিকাশমন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীপালক সম্মাননিধি প্রকল্পে গত বছর রাজ্যে ৩ হাজার প্রাণীপালককে বছরে ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এবছর আরও বেশী প্রাণীপালকদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।