কুমারঘাট, ৩১ মে : জল নিষ্কাশনি ব্যাবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে, তাই বিপর্যস্ত ঊণকোটি জেলার কুমারঘাট মহকুমার সায়দাবাড়ীর একটি গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের জনজীবন। নৌকা দিয়ে বাড়ীতে যেতে আসতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। সব জেনেও নীরব প্রশাসন।
সম্প্রতি ঘূর্নিঝড় রেমালের প্রভাবে টানা বৃষ্টির জেরে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে ত্রিপুরার বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা। কুমারঘাট মহকুমায়ও নদীগুলোর জলস্তর বেড়ে গিয়ে দেখা দিয়েছিল প্লাবন। অবশ্য শেষ দুদিন ধরে প্রকৃতি অনুকুলে থাকায় কিছুটা কেটেছে বন্যা পরিস্থিতি। কিন্তু কুমারঘাট মহকুমা এলাকায় এখনো একটি গ্রামের মানুষ রয়েছেন জলবন্দী অবস্থায়। অভিযোগের কাঠগড়ায় জাতীয় সড়ক নির্মান সংস্থা।
জানা গিয়েছে, কুমারঘাটের বিদ্যাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন সায়দাবাড়ী এলাকার একটি গ্রামের মানুষের অবস্থা এখন বিপর্যস্ত। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সম্প্রতি এলাকায় জাতীয় সড়ক নির্মানের কাজ করেছে নির্মান সংস্থা এনএইচআইডিসিএল। তখনই রাস্তার মাঝে জল নিষ্কাশনের জন্য থাকা কালভার্টের পাশে ফেলা হয় মাটি। অতিবৃষ্টিতে সেই মাটি ধসে কালভার্টের মুখে গিয়ে বন্ধ হয়ে পড়ে জল নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা। এর পর থেকেই জলবন্দী হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম।
জল নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ায় অতিবৃষ্টিতে এলাকার বেশ কয়েকটি পুকুর ডুবে গিয়ে গোটা এলাকা রূপ নিয়েছে বিলের। গ্রামে যাতায়াতের যে কয়েকটি রাস্তা ছিল সবকটি চলে গিয়েছে জলের তলায়। ফলে বাঁশের মাচা বানিয়ে তার উপর বসেই জল পেরিয়ে গ্রামে যেতে আসতে হচ্ছে গ্রামবাসীদেরকে। বৃষ্টি থামলেও জমা জল না সরায় কমছেনা ঐ জায়গার জলস্তর। এমতাবস্থায় শিশু ও অসুস্থ রোগীদের নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন ঐ গ্রামের মানুষ। শুধু তাই নয়, জলের তোড়ে ফাঁটল দেখা দিয়েছে এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ীতে। এতে ঘর ধসে বিপত্তি ঘটার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
তাদের অভিযোগ এনিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের জানিয়েও সমস্যা নিরসনে এগিয়ে আসছেনা কেউই। শুধু তাইনয়, এই কৃত্রিম বন্যার জেরে ঐ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি ফুল,ফল এবং রাবারের নার্সারি। জলে ভেসে গেছে প্রচুর চারাগাছ। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন নার্সারির মালিক। জলের তোড়ে বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গিয়েছে নতুন তৈরী হওয়া জাতীয় সড়কের বিভিন্ন অংশ। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন অতসত্তর তাদের দিকে নজর দিয়ে তাদের জলবন্দি জীবন থেকে নিস্তার দিক চাইছেন ভূক্তভোগীরা।