আগরতলা, ২ ডিসেম্বর।। যুবশক্তি হচ্ছে দেশের মুল সম্পদ। যুবশক্তির মানসিক বিকাশকে সমৃদ্ধ করে উন্নত দেশ গড়ারকাজে লাগাতে হবে। পাশাপাশি দেশের মহান মনীষী স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাভাবনাকে সামনে রেখে যুবশক্তিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। আজ নজরুল কলাক্ষেত্রে ২৭ তম রাজ্যভিত্তিক যুব উৎসবে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন।
যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক যুব উৎসবে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যে ১৯৯৪ সাল থেকে ব্লকস্তর থেকে শুরু করে রাজ্যন্তরীয় যুব উৎসব সংগঠিত হয়ে আসছে। ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে জাতীয় যুব উৎসব পালনের মধ্যদিয়ে যুব উৎসব আয়োজনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। যুব উৎসব আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যুবশক্তির মধ্যে দেশপ্রেমের ভাবনাকে জাগ্রত করা। স্বামী বিবেকানন্দ দেশের যুব সম্প্রদায়কে উন্নত ভারত গড়ার কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের দেশপ্রেমের এই চিন্তাভাবনা বর্তমান সময়েও প্রাসঙ্গিক।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হল যৌবন কাল। যৌবন কালেই অন্তর্নিহিত প্রতিভা ও শক্তির বিকাশ ঘটে থাকে। পৃথিবীতে যত সমাজ প্রগতির বিপ্লব হয়েছে তার সবই সম্ভব হয়েছে যুবশক্তিকে সঠিক দিশা দেওয়ার মধ্য দিয়ে। এই যৌবনকালকে সঠিক দিশায় পরিচালিত করলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে। এরজন্য যুবশক্তির মেধা ও মননকে সঠিকপথে ধাবিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি অন্তর্নিহিত মেধাশক্তি বিকশিত করার মাধ্যমে যুবকদের জাগ্রত করে তুলতে পারলে সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও সহজ হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত রাজ্য হিসাবে গঠন করার সংকল্প নিয়েছে। সরকারের পাশাপাশি যুব সমাজকেও এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। শুধু তাই নয় যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধেই যুব সমাজকে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রতিভার কোনও অভাব
নেই। ছেলেমেয়েদের প্রতিভার বিকাশে আমাদের সকলকেই দায়িত্ব নিতে হবে। অনুষ্ঠানে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, পৃথিবীর বা দেশের যেকোনো পরিবর্তনেই যুবশক্তির বড় ভূমিকা থাকে। আমাদের দেশ বর্তমানে খেলাধুলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যুবারা অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করছে। রাজ্যেও অনেক প্রতিভাবান যুবক যুবতী রয়েছে। তাদের উপর আমাদের প্রত্যাশা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, যুবশক্তি হচ্ছে দেশের সম্পদ। এই সম্পদকে দেশমাতৃকার সেবার কাজে নিয়োজিত করতে হবে। পাশাপাশি যুবশক্তিকে বিভিন্ন ধরণের অপসংস্কৃতি হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে। এবারের রাজ্যভিত্তিক যুব উৎসবে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পাশাপাশি জল সংরক্ষণ, জীবন শৈলীর পরিবর্তন, ফিট ইন্ডিয়া, মিলেট খাদ্য উৎপাদন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও আলোচনা করা হবে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পদদ্মশ্রী দীপা কর্মকার এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা সত্যব্রত নাথ। রাজ্যে সামাজিক কর্মকান্ডের জন্য জাতীয়স্তরে পুরস্কৃত হয়েছেন এমন কয়েকজনকে অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রদান করা হয়।