আগরতলা, ২ ডিসেম্বর।। রাজ্যের শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এটা বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। এই সরকার ২০১৮ সাল থেকেই গুণগতমানসম্পন্ন প্রসবকালীন ব্যবস্থা ও নবজাতক এবং শিশুদের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছে। এরফলে রাজ্যে ২০২০ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী নবজাত শিশুর মৃত্যু হার প্রতি হাজারে কমে ১৮তে দাঁড়িয়েছে। আজ হাঁপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের কনফারেন্স হলে আয়োজিত ২৯তম পূর্বাঞ্চল শিশু স্বাস্থ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মূল পর্বের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। উল্লেখ্য, তিনদিনব্যাপী এই সম্মেলন গত ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। ইন্ডিয়ান একাডেমিক্স অব পেডিয়াট্রিকসের ত্রিপুরা শাখার উদ্যোগে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ,
ওড়িশা, ঝাড়খন্ড এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজা থেকে শিশু বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলন উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ অনুষ্ঠানে পূর্বাঞ্চল শিশু স্বাস্থ্য সম্মেলনের স্যুভেনিয়র, অ্যাবস্ট্রাক্ট বুক এবং পেডি ইনফো বইয়ের আবরণ উন্মোচন করেন। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা ডা. এস এ কৃষ্ণা এবং মরণোত্তর ডা. অশ্বিনী কুমার মোহান্তিকে লাইফটাইম এচিভমেন্ট পুরস্কার প্রদান করেন। সম্মেলনে ১১ জন শিশু বিশেষজ্ঞকে পূর্বাঞ্চল শিশু বিশেষজ্ঞ শিরোমণি পুরস্কার ও ১০ জন শিশু বিশেষজ্ঞকে ইন্ডিয়ান একাডেমিক্স অব পেডিয়াট্রিক্স পূর্বাঞ্চল পায়ওনিয়ার পুরস্কার দেওয়া হয়।
সম্মেলে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভবিষ্যত ভারতবর্ষের স্থিতিশীল উন্নয়নে আজকের শিশুরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। তাই বর্তমান সরকার প্রথম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযানের মতো প্রকল্পেরন মধ্য দিয়ে শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উন্নততর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাছাড়া জননী শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম, বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রম, ন্যাশনাল আয়রন প্লাস, মিশন ইন্দ্রধনুষ, পোষণ অভিযানে রাজ্যের নবজাতক, শিশু, বয়ঃসন্ধীকালীন বালক বালিকা, গর্ভবতী মহিলা, লেকটেটিং মহিলাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে মহকুমা ও জেলা হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে একেবারে অন্তিম ব্যক্তির কাছে সহজলভ্য করার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন সংস্কার করছেন। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এই ধরনের সম্মেলন ভবিষ্যতে ত্রিপুরা রাজ্যে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব ড. সন্দীপ রাঠোর, সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্সের প্রেসিডেন্ট ড. উপেন্দ্র এস কিনজাওয়াদেকর, পূর্বাঞ্চল শিশু স্বাস্থ্য সম্মেলন আয়োজক কমিটির চেয়ারপার্সন প্রফেসর ডা. সঞ্জীব কুমার দেববর্মা, সম্পাদক প্রফেসর ডা. জয়ন্ত কুমার পোদ্দার প্রমুখ।