চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষকদের মামলা খারিজ করল ত্রিপুরা হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৬ সেপ্টেম্বর।। চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষকদের নিয়োগ মামলায় যবনিকা টানলো ত্রিপুরা হাইকোর্ট। পূর্ব নির্ধারিত সুচি অনুযায়ী মঙ্গলবার ত্রিপুরা হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে খারিজ হয়ে গেল ১০৩২৩ শিক্ষকদের পক্ষে দাখিল করা মামলা। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মামলা খারিজ করে দিয়ে উল্টো ২৫ হাজার টাকার কস্ট ধার্য করে দিয়েছে আবেদনকারীর উপর। হাইকোর্টের এই রায়ের পর রাজ্যের চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষক মামলা ক্লোজ চ্যাপ্টার বলা চলে। কারণ এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বহু মামলা, গণঅবস্থান, পথ অবরোধ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বহু সমীকরণ এর প্রচেষ্টা হয়েছে রাজ্যে।

এতদিন রাজ্যের ইতিহাসে ১০,৩২৩ চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা একটা বিশেষ আলোচনার বিষয় ছিল তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। ইতিপূর্বে ত্রিপুরা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টেও স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল হয়েছিল। যদিও সুপ্রিম কোর্টে টিকেনি এই আবেদন। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার প্রফেসর মানিক সাহা অনেক আগেই বলে দিয়েছিলেন চাকরিচ্যুত ১০৩২৩ শিক্ষক মামলা ক্লোজড চ্যাপ্টার। ত্রিপুরা হাইকোর্টের আজকের রায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই কথার উপর এই সীলমোহর দিল বলা চলে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাম আমলে তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সময়ে আইন কানুনের তুয়াকা না করে শিক্ষক পদে এই চাকরিগুলি প্রদান করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বেআইনিভাবে নিয়োগের কারণে এই চাকরিগুলি বাতিল করে দিয়েছিল ত্রিপুরা হাইকোর্ট। তবে ২০১৮ সালে রাজ্যে বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই চাকরিগুলিকে বাঁচাবার জন্য আইনগতভাবে কোন পথ রয়েছে কিনা তা খুঁজে বার করার জন্য একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট এবং পরিষ্কার পর্যবেক্ষণের পর চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের পুনঃ নিয়োগ কোনভাবেই সম্ভব ছিল না যা ইতিমধ্যে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু এরপরও ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনের আগে একাংশ রাজনৈতিক দল বিষয়টিকে হাতিয়ার করে ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে নেমেছিল। চাকরির দাবিতে সরকার ফেলে দেওয়ার মত ঘৃণ্য চক্রান্তেও লিপ্ত হয়েছিল চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের একাংশ। শিক্ষক নামধারী একাংশ রাজনৈতিক ব্যাপারীরা এই ইসুটিকে হাতিয়ার করে বরাবরই রাজ্যের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল উত্তপ্ত করে তোলার প্রচেষ্টা করেছে। সর্বশেষ ত্রিপুরা হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রায় বেরিয়ে আসে। যা থেকে স্পষ্ট আইন আইনের পথেই চলবে। ত্রিপুরা হাইকোর্টের এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নানা মুনি নানা মত পোষণ করবেন, ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে কথা বলবেন, তবে হাইকোর্টের এই রায়ের মধ্য দিয়ে চাকরিচ্যুত ১০৩২৩ শিক্ষক মামলায় শেষ পেরাক পড়লো বলা চলে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?