স্টাফ রিপোর্টার, সোনামুড়া, ২০ সেপ্টেম্বর।। ১৬ বছরের কিশোরের দ্বারা খুনের জেরে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীদের থানা ঘেরাও। শুধু তাই নয় বাজার বন্ধ রেখে নেশার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন ব্যবসায়ীরা।মেলাঘর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দেবনাথ এর নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে এবং নেশা মুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে বুধবার বাজার এলাকায় মৌন মিছিল এবং থানায় ডেপুটেশন সংগঠিত করলেন মেলাঘর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি।
এদিন ব্যবসায়ীরা মেলাঘর বাজার থেকে একটি মৌন মিছিল সংঘটিত করে মেলাঘর থানার সামনে এসে জড়ো হয়। সেখান থেকে সমিতির সদস্যরা পাঁচ দফা দাবিতে মেলাঘর থানায় ডেপুটেশন প্রদান করেন। ডেপুটেশনের বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে মেলাঘর বাজারের বিভিন্ন চৌমুহনী বা দোকানগুলোতে নেশা সামগ্রী বিক্রি বন্ধ করা, নেশা কারবারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা, বাজার এলাকাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে গত রবিবার প্রকাশ্য দিবালোকে নিজ দোকানেই খুন হন মেলাঘর বাজারের ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দেবনাথ। তাই এ ধরনের ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়টিও মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শশীমোহন দেববর্মার নিকট তুলে ধরেন মেলাঘর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা ।উল্লেখ্য, ১৭ সেপ্টেম্বর ১৬ বছরের এক স্কুল ছাত্রের হাতে খুন হন মেলাঘর নেতাজি চৌমুনীর এমআরএস জেরক্স দোকানের মালিক ৫২ বছরের বিশ্বজিৎ দেবনাথ। মেলাঘর তেলকাজলা গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাপস দেবের ছেলে তিমির দেব মেলাঘর নেতাজী চৌমুনীর এমআরএস জেরক্স দোকানে জেরক্স করে।
জেরক্স করার পর দোকানের মালিক বিশ্বজিৎ দেবনাথকে তিমির দেব ৫০০ টাকার নোট দেন। দোকানের মালিক বিশ্বজিৎ দেবনাথ ৫০০ টাকা খুচরো দেওয়ার পর তিনি দেখেন তার দোকানের ক্যাশ বাক্সে আড়াই হাজার টাকা নেই। তখন তিনি ১৬ বছরের তিমির দেবের কাছে দেখতে পান আড়াই হাজার টাকা রয়েছে। তখন এমআরএস এর জেরক্সে দোকানের মালিক বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলে তুমি আমার ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা চুরি করেছ। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।
এক পর্যায়ে তিমির দেব তার স্কুলের ব্যাগ থেকে ধরালো ছুরি বের করে জেরক্সের মালিক বিশ্বজিৎ দেবনাথকে তার পিঠে ও মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ১৬ বছরের বালক তিমির দেবকে নেতাজি চৌমুহনীর অন্যান্য ব্যবসায়ীরা দৌড়ে গিয়ে মেলাঘর মধ্যবাজারে আটক করে। সেখান থেকে মেলাঘর থানার পুলিশ তিমির দেবকে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে মেলাঘর থানায় নিয়ে যায়।এদিকে আক্রান্ত বিশ্বজিৎ দেবনাথকে মেলাঘর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে মেলাঘর হাসপাতাল থেকে দ্রুত আগরতলা জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু বিশ্বজিৎ দেবনাথকে জিবি হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই তার মৃত্যু হয়।