মরক্কো, ১১ সেপ্টেম্বর : মরক্কোর ভয়াবহ ভূমিকম্পে উদ্ধারকাজ যত এগোচ্ছে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২,৮৬২। আহত কমপক্ষে আড়াই হাজার। মরক্কোর উদ্ধারকারীদের সাহায্য করছে বিদেশী দল। নিখোঁজ বহু।গত শুক্রবার ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মরক্কো।
উৎসস্থল ছিল মরক্কোর মারাকাশের ৭১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৮। ভূমিকম্পের জেরে মুহূর্তে খেলনা বাড়ির মতো ভেঙে পড়ে ছোট বড় অসংখ্য ইমারত। কিছু বোঝার আগেই ভারী কংক্রিটের নিচে চাপা পড়ে মারা যান অসংখ্য মানুষ। বিধ্বংসী এই কম্পনের জেরে ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে ইউনেস্কো হেরিটেজ হিসেবে চিহ্নিত ঐতিহাসিক মারাকেশ শহরকে ঘিরে থাকা লাল দেওয়াল। ধবংসস্তূপের নিচে প্রাণের সন্ধানে জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ।
আহতদের উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এই কাজে মরক্কোর উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে স্পেনের একটি দল । যেখানে রয়েছেন ৩০ জন দমকলকর্মী, ডাক্তার ও নার্স রয়েছেন।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, গত ৬০ বছরের মধ্যে মরক্কোয় হওয়া সব চেয়ে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে তিন লক্ষ মানুষের উপরে। ভেঙে পড়েছে সে দেশের অধিকাংশ ঘর-বাড়ি। গত তিন রাত ধরে খোলা আকাশের নীচে কাটাতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। মুলে ব্রাহিম, ম্যারাকেশ, কাসাব্লাঙ্কা, ইমদাল-সহ বেশ কিছু জায়গায় অস্থায়ী শিবির তৈরি করা হয়েছে। যেখানে সম্ভব, সেখানে সেনার তরফে খাবার, জল, ওষুধ, কম্বল, তাঁবু পাঠানো হচ্ছে। আল হাউজ় অঞ্চলে মরক্কোর সেনা ২৪ জন চিকিৎসক, ৪৬ জন নার্স ও ৫৮ জন সামাজিক ও মানসিক বিশেষজ্ঞের সাহায্যে ত্রাণ শিবিরে থাকা মানুষজনকে সাহায্য করছে। কোথাও আবার রক্তদান করছেন পুলিশকর্মীরাই।
উল্লেখ্য, মরক্কোর এই ভয়াবহ বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে প্রায় সকল রাষ্ট্র। আর্থিক সাহায্য থেকে উদ্ধারকার্যে প্রযুক্তিগত সাহায্যে এগিয়ে এসেছে তারা। শোকপ্রকাশ করেছেন তাবড় রাষ্ট্রনেতারা। শোকপ্রকাশের জন্য শনিবার প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। অন্ধকারে ঢেকেছিল গোটা আইফেল টাওয়ার। শুধু শোকপ্রকাশ নয়, প্যারিস প্রায় ৫ লক্ষ ইউরো আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে। এমনকী, মরক্কোর ‘শত্রু’ প্রতিবেশী আলজিরিয়া।
দুবছর আগে আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমের ছোট্ট রাষ্ট্র মরক্কোর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল তারা। কিন্তু এমন দুর্দিনে তারাও এগিয়ে এসে মরক্কোর পাশে দাঁড়িয়েছে বলে খবর। সেখান থেকে ত্রাণসামগ্রী এসেছে। শুক্রবার জি-২০ সম্মেলন থেকে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। হিন্দুস্থান সমাচার / কাকলি