স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১১ সেপ্টেম্বর : বিজেপি এবং তিপ্রা মথার কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জম্পুইজলা। ঘটনা সোমবার দুপুরে। এদিন শাসক বিজেপি দলের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল জম্পুইজলা ব্লক সংলগ্ন বুকরুই কমিউনিটি হলে। ১২ টাকারজলা মন্ডল কমিটির উদ্যোগে কার্যকর্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই অনুযায়ী কিছুদিন ধরেই বিজেপির কর্মী সমর্থক এবং নেতৃত্বরা টাকারজলা এবং জম্পুইজলা এলাকায় প্রচার চালিয়ে আসছিল। সোমবার কার্যকর্তা সম্মেলনে যাতে বিজেপির কেউ না আসতে পারে বুকরুই কমিউনিটি হলে তার জন্য তিপ্রা মথা দলের অনেক কর্মী সমর্থক টাকারজলা এবং জম্পুইজলা সড়কে বেরিকেট করে রেখেছিল।
কিছু কিছু বিজেপি কর্মী সমর্থক সমস্ত ভয় ভীতি উপেক্ষা করে বুকরুই কমিউনিটি হলে প্রবেশ করে। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য এবং সিপাহীজলা জেলা উত্তর অংশের সভাপতি গৌরাঙ্গ ভৌমিক সহ নেতৃত্বরা বুকরুই কমিউনিটি হলে প্রবেশ করে এবং প্রদীপ প্রজ্জলন করে কার্যকর্তা সম্মেলন শুরু করে। কার্যকর্তা সম্মেলনে রাজীব ভট্টাচার্য বলেন ভারতীয় জনতা পার্টির সংগঠনের বৈঠক সবসময় হয়। সোমবার ছিল টাকারজলা মন্ডলের উদ্যোগে কার্যকর্তাসম্মেলন। এ
ই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য হল কিছুদিন পর দেশের লোকসভা নির্বাচন। এই লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরা রাজ্যের দুটি আসনেই ভারতীয় জনতা পার্টি থেকে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদেরকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করানো। নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদিকে আবারো ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়ী করা। কারণ উনার নেতৃত্বে দেশ এবং রাজ্য উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের সমৃদ্ধি হচ্ছে। বিশ্ব দরবারে ভারত আজ এক নব দিগন্তের সূচনা করেছে। ভারতীয় জনতা পার্টির সরকারের গৃহীত প্রকল্পগুলোকে গ্রাম থেকে শহর নগর পাহাড় সর্বত্র ছড়িয়ে দিতেই কার্যকর্তাদের নিয়ে ১২ টাকারজলা মন্ডলের উদ্যোগে ছিল সম্মেলন।
তিনি আরও নলেন নরেন্দ্র মোদির জন্মদিনেও থাকবে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি। কিভাবে কর্মসূচি গুলি প্রতিপালন করা হবে টাকারজলা এবং জম্পুই জলায় তা নিয়েই ছিল কার্যকর্তাদের বৈঠক।বৈঠক শেষ হওয়ার পর যখন বিজেপি দলের কার্যকর্তারা বুকরুই কমিউনিটি হলঘর থেকে বের হচ্ছিলেন তখন মথা দলের কর্মী সমর্থকরা বেশ কিছু কার্যকর্তাকে দৌড়াতে দৌড়াতে একেবারে টাকারজলা হরিয়াপাড়া পর্যন্ত নিয়ে যায়। বেশ কিছু কার্যকর্তাকে প্রচন্ডভাবে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। যখন মথার কর্মী সমর্থকরা মারতে থাকেন বিজেপি কার্যকর্তাদের তখন বিজেপি কার্যকর্তারাও একটা সময় প্রতিরোধ গড়ে তুলেন।
আঘাত পাল্টা আঘাতে উত্তপ্ত হয়ে যায়, টাকারজলা হরিয়া পাড়া। দুই দলের কর্মী সমর্থকদের আঘাতে আম নাগরিকদের দুটি স্কুটি এবং তিনটি বাইক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গ্রামের মানুষ এই ভয়ানক দৃশ্য দেখে যে যার মত করে পালিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করে। উভয় দলের মারপিট আটকাতে গিয়ে আহত হন টাকারজলা থানার ওসি রথীন্দ্র দেববর্মা এবং একজন পুলিশ কনস্টেবল এবং নয় জন বিজেপি কর্মী।তাদের প্রত্যেককে টাকারজলা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। নামানো হয় বিশাল পরিমাণ পুলিশ বাহিনী। স্তব্ধ হয়ে যায় টাকারজলা এবং জম্পুইজলা সড়ক। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন টাকারজলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ কলই।
তিনি দোষারোপ করেন বিজেপি দলের কর্মী সমর্থকদের। তাদের কারণেই নাকি এই হামলা-হুজ্জতি হয়েছে।অপরদিকে বিজেপির তরফে অভিযোগ কার্যকর্তাদের সম্মেলন বানচাল করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিপ্রা মথা দলের কর্মী সমর্থকরা বিজেপির কর্মী সমর্থকদের উপর আঘাত হেনেছে। আঘাত পাল্টা আঘাত হামলা এবং পাল্টা হামলা অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগে সংবাদ লেখা পর্যন্ত উত্তপ্ত রয়েছে জম্পুইজলা থেকে টাকারজলা হয়ে হরিয়াপাড়া পর্যন্ত। এক কথায় টাকারজলা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি দল কোন কর্মসূচি পালন করবে সেটা হয়তো মেনে নিতে পারছে না মথার কর্মী সমর্থকরা। যার কারণেই আজকের এই সংঘর্ষ এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে টাকারজলা ও জম্পুইজলা এলাকা উত্তপ্ত হয়ে আছে। প্রচুর সংখ্যায় নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পদস্থ অধিকারীকরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছেন।