রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহার সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৪ আগস্ট।। রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহার সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক মহাকরণে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা এবং স্বাস্থ্য সচিব ড. দেবাশিষ বসু সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে রাতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব ড. দেবাশিষ বসু রাজ্যের ডেঙ্গুজনিত পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। সচিব জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্যে শুধুমাত্র সিপাহীজলা জেলা থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া গেছে। জেলা এবং রাজ্যস্তরের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৭ জন। তার মধ্যে আগরতলা জিবি হাসপাতালে ৩৫ জন ভর্তি রয়েছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে ঐ এলাকায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নেতৃত্বে চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব জানান, জিবি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এই বিষয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। চিকিৎসা পরিষেবার পাশাপাশি আইইসি কর্মসূচির উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। রক্ত পরীক্ষার কিটস যথেষ্ট মজুত রয়েছে। আজই রক্ত পরীক্ষার জন্য ২ লক্ষ টাকার কিটস কেনার জন্য এন এইচ এম কে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, নিয়মিত সংশ্লিষ্ট এলাকায় মশা মারার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রবিবারকে ড্রাই ডে হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাবার বাগান এলাকায় মশা নিধনে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। জনসচেতনতার উপরও স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রচার অভিযান সংগঠিত করা হচ্ছে। ২৪ জুলাই থেকে জোরকদমে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য সচিব জানিয়েছেন।

ডেঙ্গু আক্রান্ত এলাকায় জেলা প্রশাসন সহ অন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য সচিব জানান রক্ত পরীক্ষার জন্য আই জি এম হাসপাতাল থেকে একটি রক্তের হিমোগ্রাম মেশিন জিবি হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব নিজেই পরিস্থিতির সম্পর্কে সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেন। ডেঙ্গু আক্রান্তদের বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে নিয়মিত ফলোআপ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য সচিব জানান, একজন জাপানী এনকেফেলাইটিসে আক্রান্ত রোগীর টিএমসি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে এজিএমসি-র মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. তপন মজুমদার জানান, রাজ্যে বর্তমানে ডেঙ্গুর যে ধরণের টাইপ পাওয়া গেছে এতে আতঙ্ক বা উদ্বেগের কোন কারণ নেই। তবে জনগণকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে তিনি পরামর্শ দেন। জ্বরের লক্ষণ দেখা গেলে সাথে সাথেই চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। জিবি হাসপাতালে দিনের পরীক্ষার ফলাফল দিনেই পাওয়া যাচ্ছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে জিবি হাসপাতালের সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, সিপাহিজলা থেকে পর্যায়ক্রমে আসা ডেঙ্গু আক্রান্তদের জিবিতে বিশেষ ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দুজন ডেঙ্গু আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন। তাদের জিবি হাসপাতালের গাইনো ওয়ার্ডে চিকিৎসা করা হচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলেনে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরুনাভ দাসগুপ্ত ডেঙ্গু রোগের উপসর্গগুলি তুলে ধরেন এবং জনগণকে সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ দেন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?