মৎস্য উৎপাদনে রাজাকে স্বনির্ভর করে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে : মৎস্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, বিশালগড়, ২৮ জুলাই।। মৎস্য উৎপাদনে রাজ্যকে স্বনির্ভর করে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য রাজ্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। গ্রামীণ এলাকাগুলিতে মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মৎস্যজীবীদের উন্নতপ্রথায় মৎস্যচাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গতকাল সিপাহীজলা জেলাশাসক কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে মৎস্য, প্রাণী সম্পদ বিকাশ ও তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের জেলাভিত্তিক এক পর্যালোচনা সভায় মৎস্যমন্ত্রী সুধাংশু দাস একথা বলেন।

জেলাভিত্তিক এই পর্যালোচনায় মৎস্য, প্রাণী সম্পদ বিকাশ ও তপশিলিজাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস সভাপতিত্ব করেন। সভায় সিপাহীজলা জেলার মংসা, প্রাণী সম্পদ বিকাশ ও তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সভায় মৎস্যমন্ত্রী বলেন, জেলায় মাছের চাহিদা ৯৫ শতাংশ যাতে জেলাতেই উৎপাদন করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরী করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। পর্যালোচনা সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, গৃহপালিত প্রাণীদের রোগ প্রতিরোধে দপ্তরকে সচেতন হতে হবে। প্রাণীপালকদেরও এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, সরকার রাজ্যে প্রাণী খাদ্য উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিয়েছে। সরকারের এই কর্মসূচিতে গ্রামীণ এলাকায় রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

সভায় তিনি তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ জেলার গ্রামীণ এলাকার প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেন, তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের প্রকল্পগুলি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পর্যালোচনা সভায় মৎস্যদপ্তরের জেলা আধিকারিক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে জেলার মৎস্যদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মপরিকল্পনার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত অর্থবছরে মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় জেলার ৯ হাজার ৫২২টি পরিবারকে মৎস্যচাষে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হয়েছে ৬৭ লক্ষ ৬৯০ টাকা। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী অনুসূচিত জাতি অভ্যুদয় যোজনায় জেলার বিশালগড় ও সোনামুড়া মহকুমায় ১৬৭টি মৎসজীবী পরিবারের পুরাতন পুকুর সংস্কার করা হয়েছে।

তপশিলিজাতি সম্প্রদায়ের ৮১টি মৎস্যজীবী পরিবারকে মৎস্যচাষে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। জেলার ৮০টি মৎস্যচাষভিত্তিক সহায়ক দলগুলিকে মৎস্যচাষে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এজন্য বায় হয়েছে ২৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। সভায় মৎস্য দপ্তরের জেলা প্রতিনিধি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী মৎস্যসম্পদ যোজনায় জেলায় ১৩.৫০ হেক্টর জলাশয় মৎস্যচাষের আওতায় আনা হয়েছে। এই যোজনায় জেলায় উৎপাদিত মৎস্য বাজারজাতকরণের জন্য ৬ জন মৎস্যচাষীকে আইসবক্স সহ অটোরিক্সা ও দু’জন মৎস্যচাষীকে আইসবক্স সহ মোটর সাইকেল দেওয়া হয়েছে। সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের জেলা প্রতিনিধি জানান, গত অর্থবছরে জেলায় ৫,৯১,৯৭২ টি গৃহপালিত প্রাণী ও পাখি চিকিৎসা করা হয়েছে। তাছাড়া ৪৭,৩১,৩২৪ টি গৃহপালিত প্রাণী ও পাখির টিকাকরণ করা হয়েছে।

তিনি জানান, জেলায় গত অর্থবছরে পিএম-অজয় যোজনায় ২৫ জন প্রাণীপালককে ছাগল ও ২৫ জন প্রাণীপালককে শূকর পালনে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর যোজনায় ৭৯৪টি পরিবারকে শুকর, ৪৬৫টি পরিবারকে ছাগল, ২ হাজার ৪৯৯ টি পরিবারকে মোরগ ও ৮২৯ টি পরিবারকে হাঁস পালনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সভায় তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের জেলা আধিকারিক দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন। পর্যলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, বিধায়ক কিশোর বর্মণ, বিধায়ক সুশান্ত দেব, বিধায়ক অন্তরা সরকার দেব, জিলা পরিষদের সহাকারি সভাধিপতি পিন্টু আইচ, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের প্রধান সচিব বি এস মিশু, জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকগণ।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?