স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৩ অক্টোবর।। বাংলাদেশের সাথে রাজ্যের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলির সমাধানের বিষয়ে আন্তরিক উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের পরবর্তী হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীকে অনুরোধ জানিয়েছেন৷ আজ মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের পরবর্তী হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে মিলিত হন৷ সাক্ষাৎকারের সময় দু’জনের মধ্যে বাংলাদেশের সাথে রাজ্যের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব রাজ্যের চা বাংলাদেশে রপ্তানি করার বিষয়ে বিক্রম দোরাইস্বামীকে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের চায়ের গুণগতমান ভালো হওয়ায় এবার কলকাতার বাজারে নিলামে ২৭৬ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হয়েছে৷
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের গর্ব আনারসকে বাংলাদেশের বাজারে রপ্তানির বিষয়ে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে৷ আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সাবমে নির্মীয়মান বিশেষ অর্থনৈতিক অ’লে বাংলাদেশের উদ্যোগীরা যাতে ফল প্রক্রিয়াকরণের মাল্টি ইউনিট স্থাপন করতে এগিয়ে আসে সে বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্যোগীদের উৎসাহ প্রদানের প্রয়াস নেওয়ার জন্য বিক্রম দোরাইস্বামীকে অনুরোধ জানান৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরায় পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস এবং উদ্বৃত্ত বিদ্যৎ রয়েছে, যা শিল্প স্থাপনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়া রাজ্যে আনারস, কাঁঠাল, কাজবাদাম পর্যাপ্ত পরিমাণে উৎপন্ন হয়৷ সেগুলিকে ভিত্তি করে ফল প্রক্রিয়াকরণের শিল্প ইউনিট স্থাপনে বাংলাদেশের উদ্যোগীদের আগ্রহী করার প্রয়াস নিতে হবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের চিটাগাং বন্দর খুলে যাওয়ার ফলে ত্রিপুরা থেকে বেশি লাভবান হবে বাংলাদেশেরই৷ কারণ এই বন্দরের মাধ্যমেই ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বা’লের অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে পণ্য পরিবহণ করা হবে৷ তাতে বাংলাদেশের জনগণের রোজগারের বড় একটা সুুযোগ সৃষ্টি হবে৷ এই বিষয়টি বাংলাদেশের সরকারের সামনে তুলে ধরার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের পরবর্তী হাইকমিশনারকে অনুরোধ জানান৷ পাশাপাশি বাংলাদেশের রামগড় থেকে চিটাগাংবন্দর পর্যন্ত সিঙ্গেল রোডটিকে প্রশস্ত করার কাজটিও যাতে দ্রত শেষ করা যায় সেই বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের পরবর্তী হাইকমিশনারকে অনুরোধ জানান৷ সাক্ষাৎকারকালে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রসিদ্ধ হস্ততাঁত শিল্প, বাঁশবেত শিল্প এবং রাবার শিল্পের বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে বাজারজাতকরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷
হস্ততাঁত শিল্প, বাঁশবেতের শিল্পের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্য বাংলাদেশে আরও প্রচারের লক্ষ্যে স্টল তৈরি করে প্রদর্শনী করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া ও বাংলাদেশের সাথে ত্রিপুরার আমদানি-রপ্তানি আরও বৃদ্ধি করার জন্য রাজ্যে টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সাক্ষাৎকারকালে আগরতলা-আখাউড়া রেলপথের বাংলাদেশের দিকের রেলপথ নির্মাণের কাজ দ্রত সম্পন্ন করা, বিলোনীয়া-ফেণী রেলপথটি মিটারগেজ থেকে বডগেজে রূপান্তর করা ও বাংলাদেশে যে সমস্ত পণ্য রপ্তানির বিষয়ে যে বিধিনিষেধ রয়েছে তা নিরসনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার জন্যও মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের পরবর্তী হাইকমিশনারকে অনুরোধ জানান৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিলোনীয়া-ফেণী রেলপথটি চালু হলে বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে৷ ফলে বাংলাদেশ ও ত্রিপুরা উভয়েই লাভবান হবে৷ বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের পরবর্তী হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকারের সময় রাজ্য সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা প্রশান্ত কুমার গোয়েল উপস্থিত ছিলেন৷