স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৮ নভেম্বর।। রাজ্য সরকার আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ার প্রয়াস নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আত্মনির্ভর ভারত গড়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজ্য সরকার আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে তুলছে। রাজ্যের প্রতিটি ঘরে চাকরি বা রোজগারের ব্যবস্থা করার লক্ষ্য নিয়ে এ সরকার নিরন্তর কাজ করে চলেছে।
আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১ নং প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত রোজগার মেলা এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা স্কিল ও ঋণ মেলার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের রোজগার মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। ত্রিপুরায় এই মেলার আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই রোজগার মেলায় ১৭টি দপ্তরের বিভিন্ন পদে ৬৮৬ জনকে চাকরির অফার দেওয়া হয়েছে। অফার প্রাপকদের হাতে অফার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে এলিমেন্টারি এডুকেশনে ১৪৮০ জন স্নাতক শিক্ষক এবং ৩৯ জন সহকারি অধ্যাপকের পোস্টিং প্রকাশিত হয়।
আজকের এই রোজগার মেলায় স্কিল দপ্তরের অধীনের বিভিন্ন সংস্থাগুলির মাধ্যমে প্রায় ৩৫০ জনকে জব অফার লেটার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভারত সরকার ও জাপান সরকারের চুক্তি অনুসারে এনএসডিসিআই’র মাধ্যমে ত্রিপুরা থেকে ৫ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়েছে। ৯ মাস দিল্লিতে ট্রেনিংয়ের পর তারা জাপানে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবেন। অনুষ্ঠানে বাছাইকৃত এই ৫ জন প্রার্থীর হাতে অফার তুলে দেওয়া হয়। তাছাড়া স্বাবলম্বন, পিএমইজিপি ইত্যাদি প্রকল্পে প্রায় ৮৫ জনকে ঋণ অনুমোদন পত্র দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী। প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার মানুষকে যথার্থ সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি তাদের অধিকার সুনিশ্চিত করার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেছে। সরকার চায় রাজ্যের মানুষের প্রতিটি ঘর খুশি, সুখ এবং আনন্দে ভরে উঠুক।
সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাজ্যে জব ক্রিয়েটর তৈরি করা। এই লক্ষ্যে সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির সুবিধা ১০০ শতাংশ যোগ্য সুবিধাভোগীরা যাতে পেতে পারেন তারজন্য রাজ্যে প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান কর্মসূচি চালু রয়েছে যা আগামী ২৫ ডিসেম্বর অর্থাৎ সুশাসন দিবসের দিন পর্যন্ত চলবে।
পাশাপাশি রাজ্যে চালু করা হয়েছে ‘আমার সরকার’ নামক ওয়েব পোর্টালের। তৃণমূল স্তরে জনগণের বিভিন্ন সমস্যাগুলি দ্রুত নিরসনের জন্য এই পোর্টালটি চালু করা হয়েছে। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মানুষকে উন্নত পরিষেবা প্রদানে সরকার প্রয়াস নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার নারী ক্ষমতায়নের উপর বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, দেশের যুব শক্তির সঠিক বিকাশ চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
যুব সম্প্রদায়ের সদর্থক পরিচালনার মাধ্যমে দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। শিক্ষামন্ত্রী নবনিযুক্ত কর্মচারিদের কর্মস্থলে মূল্যবোধ, নিষ্ঠা, একাগ্রতার সাথে কাজ করার পাশাপাশি দেশ ও দেশবাসীর সেবায় নিয়োজিত থাকার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের মূল অভিমুখ হচ্ছে রাজ্যের অস্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া।
অনুষ্ঠানে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সাশুনা চাকমা বলেন, বর্তমান কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার আত্মনির্ভর ভারত ও আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ার প্রয়াস নিয়েছে। রোজগার মেলা এরই অঙ্গ। অনুষ্ঠানে শ্রমমন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস বলেন, জনকল্যাণে বিভিন্ন মেলা আয়োজনের মাধ্যমে রাজ্যস্তর থেকে গ্রামস্তর পর্যন্ত সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পগুলির সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্র। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী।