স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৯ নভেম্বর।। ত্রিপুরা ছোট রাজ্য হলেও বিভিন্ন ধরণের প্রাক’তিক এবং মানুষ দ্বারা স’ষ্ট বিভিন্ন বিপর্যয়ের ঝঁকি রয়েছে৷ তাই রাজ্যে বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতিতে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে৷ আজ প্র’াভবনে ’ইণ্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক দুইদিনের সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা ভূমিকম্পের সিসমিক জোন-৫-এ অবস্থান রয়েছে৷
এছাড়াও রাজ্য ঘূর্ণিঝড়, বজ্রঝড়, বন্যা, ভূমিধস সহ নানা বিপর্যয়ের ঝঁকি রয়েছে৷ এই সমস্ত প্রাক’তিক বিপর্যয়ের হাত থেকে প্রাণহানি ও সম্পত্তি সহ নানা ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে এই ধরণের সচেতনতামূলক সম্মেলন খবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ওএনজিসি, গেইল, টিএনজিসিএল, ইণ্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন, ওয়েল ইণ্ডিয়া প্রভ’তি গ্যাস ও তেলভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান কাজ করছে৷
পাশাপাশি রাজ্যের প্রয়োজনে বর্হিরাজ্য থেকেও সড়কপথে ও রেলে তেলের ট্যাঙ্কার নিয়মিত আসছে, যা অত্যন্ত ঝুকিঁপূর্ণ৷ গ্যাস ও তেলভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পেতে সঠিক প্রস্তুতি কিভাবে নেওয়া যেতে পারে তা এই সম্মেলনের মাধ্যমে আরও বিশদভাবে জানতে সহায়তা করবে৷ রাজ্য সরকারও বিভিন্ন বিপর্যয়ের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে৷ পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরগুলোকেও বিপর্যয় মোকাবিলায় সর্বোত্তম প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকার উৎসাহিত করছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বর্ষাকালে অনেক সময় বন্যার পরিস্থিতির স’ষ্টি হয়৷
ফলে রাজ্যকে ক’ষিক্ষেত্র সহ নানা ক্ষতির সম্মখীন হতে হয়৷ রাজ্য সরকার বন্যার পরিস্থিতির হাত থেকে নাগরিক সহ সম্পত্তি রক্ষায় সব সময় কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করেছে৷ সাম্পতিক সিত্রাং নামক ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেয়েই রাজ্য সরকার পুরো রাজ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল৷ ফলে সেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থেকে রাজ্যবাসী রক্ষা পেয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য ও জেলা প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবিলার বিভিন্ন কর্মসূচি যেমন, সচেতনতামূলক কর্মসূচি, প্রশিক্ষণ, মহড়া ইত্যাদি নিয়মিত সংগঠিত করে আসছে৷
পাশাপাশি রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রের বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরকে রাজস্ব দপ্তরের সহযোগিতায় বিপর্যয় মোকাবিলার উপর বিভিন্ন প্রস্তুতিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন৷ এছাড়া ভবিষ্যতে যে সমস্ত শিল্প কারখানা রাজ্যে স্থাপন করা হবে সেগুলিতেও দুর্যোগ ঝঁকি কমানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য একইভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা তার ভাষণে বলেন, বিপর্যয় এমন একটি বিষয় যা যেকোনও সময় হতে পারে৷
তাই সবসময় সতর্ক ও সচেতন থাকাই একান্ত প্রয়োজন৷ আজকের এই কনফারেন্স বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে সচেতনতা ব’দ্ধিতে সাহায্য করবে৷ ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বা’লের রাজ্যগুলির শিল্পা’লে বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে৷ এই বিপর্যয়ের সম্ভাবনা বিপদ থেকে সুুরক্ষা থাকতে আমাদের সর্বদা সর্তক থাকতে হবে৷ পাশাপাশি প্রত্যেক উদ্যোগীদের তাদের নিজস্ব শিল্প ইউনিটের সুুরক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে৷ মুখ্যসচিব বলেন, বিভিন্ন বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগে থেকেই সুুরক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন৷
এক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসন, বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা কমিটি, আরক্ষা প্রশাসন, এনডিআরএফ সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে৷ অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব পুণিত আগরওয়াল, ওয়েল ইণ্ডিয়া লিমিটেডের ডিরেক্টর ড: মানস কুমার শর্মা, ফেডারেশন অব ইণ্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স এণ্ড ইণ্ডাস্ট্রির (ফিকূি কো-চেয়ারম্যান এন বোস বাবু প্রমুখ৷