স্টাফ রিপোর্টার, শান্তিরবাজার, ২৫ আগস্ট।।রাজ্যের ঐতিহ্যময় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির এক বহমান ধারা রয়েছে। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আজ শান্তিরবাজার মহকুমার বীরচন্দ্রমনু বাজার সংলগ্ন মাঠে ২১তম রাজ্যভিত্তিক সংগ্রংমা পূজা ও মেলার উদ্বোধন করে মুখমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনজাতি সম্প্রদায়ের কল্যাণে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার একযোগে কাজ করছে। জনজাতিদের উন্নয়নে এই প্রথম জনজাতি সম্প্রদায়ের দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
জনজাতিদের উন্নয়নে টিটিএএডিসির আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৫০টি করার জন্য প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার মিলে জনজাতিদের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নে প্রয়াস গ্রহণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ১২টি অ্যাসপিরেশনাল ব্লকে চলছে নানা উন্নয়নমূলক কাজ। জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার উন্নয়নে শিক্ষা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
নতুন বোর্ডিং হাউস তৈরি করা হচ্ছে। দৈনিক স্টাইপেন্ড ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৫ টাকা করা হয়েছে। জনজাতি ছাত্রছাত্রীরাও যাতে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে পারে তারজন্য নানা আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গড়িয়া পূজায় ২দিন ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।
মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের জন্মদিনে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। জনজাতি সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার জন্য ১৮টি একলব্য স্কুল স্থাপনের কাজ চলছে। জনজাতি গোষ্ঠীর ঐতিহ্য মেনে নদী ও পাহাড়ের নাম রাখা হচ্ছে। দালং সম্প্রদায়কে জনজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সংসদে বিল গৃহীত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, ব্লু শরণার্থীদের পুনর্বাসনের কাজ ৪৭ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে। বাকিদের খুব দ্রুত পুনর্বাসন দেওয়া হবে। ত্রিপুরার সার্বিক উন্নয়নের জন্য রাজ্যের কাঁঠাল, ক্যুইন আনারস, সুগন্ধী লেবু, ফল, বাঁশ বেতের শিল্প, রিসা ইত্যাদি এখন দেশ বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সবকা সাথ সবকা বিকাশের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। জাতি ও জনজাতি একসাথে মিলে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক রঞ্জিত দাস, এমডিসি সঞ্জীব রিয়াৎ, এমডিসি পদ্মলোচন ত্রিপুরা, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক সাজু ভাহিদ এ, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার ড. কুলবন্ত সিং, ব্লু জনজাতি গোষ্ঠীর সমাজপতি খবরাম রিয়াং, ব্লু জনজাতি গোষ্ঠীর সমাজপতি বিদ্যাজয় রিয়াং।
স্বাগত ভাষণ দেন সংগ্রংমা পূজা কমিটির সম্পাদক খনারাম রিয়াং। সংগ্রংমা মেলায় ২দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পূজার আয়োজন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রংমা কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র রিয়াৎ।