স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৭ আগস্ট।। রাজ্যের হস্ততাঁত, হস্তকার ও রেশমচাষ শিল্পীদের বর্তমান সময়ের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য ও গুণমান বজায় রেখে পণ্য উৎপাদন করতে হবে। বাজারজাতকরণের লক্ষ্য নিয়ে রুচিসম্মত পণ্য উৎপাদন করতে হবে। উৎপাদিত পণ্য বেশি করে বিক্রি হলেই এই শিল্পের সাথে যুক্ত শিল্পীদের আর্থিক বুনিয়াদ আরও সুদৃঢ় হবে।
সরকার রাজ্যের তাঁত শিল্পীদের দক্ষতার উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, পণ্যের বাজারজাতকরণ ও মূলধন সংস্থানের বিষয়ে বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজ হস্ততাঁত, হস্তকারু ও রেশম শিল্প দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্রা শহীদ ভগৎ সিং যুব আবাসে অষ্টম জাতীয় হস্ততাঁত দিবসের উদ্বোধন করে একথা বলেন। উল্লেখ্য, আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উপলক্ষে এবার জাতীয় হস্ততাঁত দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে দপ্তরের বিশেষ সচিব শ্রী চন্দ্রা বলেন, ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের এক অনুষ্ঠানে আজকের দিনটিকে জাতীয় হস্ততাঁত দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণ দেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাঁতশিল্প ও তাঁতশিল্পের সাথে যুক্ত শিল্পীদের স্বনির্ভর করে তোলা। তিনি বলেন, দেশে এই শিল্পের সাথে প্রায় ৫০ লক্ষ শিল্পী যুক্ত রয়েছেন।
প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা এই শিল্পে টার্ণওভার রয়েছে। তিনি উপস্থিত তাঁতশিল্পীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, রাজ্য সরকার আপনাদের উৎপাদিত পণ্য বহিরাজ্যে বাজারজাত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রাজ্যে এখন হস্ততাঁত, হস্তকার ও রেশম শিল্পের মোট ১০৪টি ক্লাস্টার রয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হস্ততাঁত, হস্তকারু ও রেশম শিল্প দপ্তরের অধিকর্তা কুস্তল দাস, দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা অনির্বান দত্ত, কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েভার্স সার্ভিস সেন্টারের সহ অধিকর্তা বিজয় পি এস সমারকার, কেন্দ্রীয় সরকারের রিসার্চ এক্সটেনশান সেন্টারের বিজ্ঞানী ড. নারায়ণ বিশ্বাস, রেশম শিল্প উন্নয়ন আধিকারিক প্রদীপ সাহা এবং পূর্বাশার আধিকারিক সুভাষ সূত্রধর।
অনুষ্ঠানে স্টেট ম্যারিট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় রেশম শিল্পী রবিশ্বরী রূপিনী, মাজেদা খাতুন, হস্ততাঁত শিল্পী মঙ্গলেশ্বরী দেববর্মা, মনমোহন দেবনাথ, হস্তকার শিল্পী হরিচরণ দাস ও রীমা দেববর্মাকে।
তাছাড়া হস্ততাঁত শিল্প প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম রত্নাপ্রভা চাকমা, দ্বিতীয় সুচিত্রা ত্রিপুরা ও তৃতীয় বিরজা সিনহাকে পুরস্কৃত করা হয়। রেশমগুটি উৎপাদন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম মিলন্তি রূপিনী, দ্বিতীয় প্রমিলা রূপিনী ও তৃতীয় রীনা শুরু বৈদ্যকে পুরস্কৃত করা হয়। হস্তকারু শিল্প প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম উৎপল দাস, দ্বিতীয় সুমন সুত্রধর ও তৃতীয় গীতারানী দাসকে পুরস্কৃত করা হয়।
এ সমস্ত প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীদের যথাক্রমে ১০ হাজার টাকা, ৭,৫০০ টাকা ও ৫,০০০ টাকার চেক ও শংসাপত্র দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ সচিব সহ অতিথিগণ তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে মহিলারা চিরাচরিত পোশাকে ফ্যাশান শো-তে অংশ নেন।
এছাড়াও বিভিন্ন ক্লাস্টার তাদের উৎপাদিত রেশম শাড়ি, রেশম সূতা, তুত পলু, কুটির শিল্পের সামগ্রী, রিসা, পাছড়া ইত্যাদি প্রদর্শন করে ও বিক্রয় করে। অনুষ্ঠানে দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা সঞ্জয় চক্রবর্তী সহ বহু শিল্পী উপস্থিত ছিলেন।