বিদ্যালয় চলো অভিযানে শিক্ষার পাশাপাশি রোজগার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে : শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৮ জুলাই।। রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর বিদ্যালয় চলো অভিযান কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে আর্ন উইথ লার্ন অর্থাৎ শিক্ষার পাশাপাশি রোজগার প্রকল্প গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আজ সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ তাঁর নিজ অফিসকক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষা দপ্তরের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারীর ফলে রাজ্যের ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রায় ৮,৮৫০ ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ছুট হয়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, এর বাইরে অনেক ছাত্রছাত্রী স্কুলছুট থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সকল ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়মুখী করার উদ্দেশ্যে এবং তাদেরকে শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এই প্রকল্প গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সকল মহাবিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাজে লাগানো হবে স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের গন্ডিতে নিয়ে আসার জন্য।

তিনি বলেন, এই অভিযান সফল করতে রাজ্যে ব্যাপকভাবে ডোর টু ডোর সমীক্ষা করা হবে। মহাবিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় গণনাকারী হিসেবে সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদের নিজ নিজ মহাবিদ্যালয়ে নিজেদের নাম নিবন্ধন করার জন্য অনুরোধ করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিদ্যালয়ছুট শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণ এবং স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের সাম্মানিক হিসেবে প্রতি ভর্তি পিছু ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে আনুমানিক প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছা গণনাকারী প্রয়োজন।

এই কাজে কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং আশাকর্মীদের কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের এই কাজের জন্য প্রতি ভর্তি পিছু ৫০০ টাকা সাম্মানিক দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক শিক্ষিকা যারা এই কাজে যুক্ত হবেন তাদেরকে সাম্মানিক হিসেবে ভর্তি পিছু ২০০ টাকা করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যের প্রাক প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীর রয়েছে ১,৫১,৭১৯ জন। এই সকল ছাত্রছাত্রীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্কুল ব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষা দপ্তর গ্রহণ করেছে। এরজন্য রাজ্য সরকারের ব্যয় হবে ৭ কোটি ৫৮ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। তিনি বলেন, রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যবই দেওয়া হচ্ছে।

এর জন্য সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১৩ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা। এছাড়াও প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর এসসি, এসটি, বিপিএল ক্যাটাগরির ছাত্রদের স্কুল ইউনিফর্ম বাবদ ৬০০ টাকা করে প্রতি ছাত্রকে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সব মেয়েদেরই স্কুল ইউনিফর্ম বাবদ ৬০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার পরিচালিত সব বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়েদের বাইসাইকেল দেওয়া হচ্ছে।

এরজন্য রাজ্য সরকারের প্রতি বছর ব্যয় হচ্ছে সাড়ে ১ কোটি টাকা। সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার পাইলট প্রকল্প হিসেবে অ্যাসপিরেশনাল ডিস্ট্রিক্ট ধলাই জেলায় প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিলে মধ্যাহ্নকালীন আহারের পাশাপাশি প্রাতরাশে অতিরিক্ত আহার হিসেবে ডিম সিদ্ধ, মরসুমী ফল, দুধ বা সমতুল্য খাদ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষা দপ্তর গ্রহণ করেছে।

এরজন্য ব্যয় হবে প্রায় ৫ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা৷ শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, জাতীয় শিক্ষানীতিকে নিবিড়ভাবে বাস্তবায়নের জন্য ছাত্রছাত্রীদের সাথে শিক্ষক শিক্ষিকার সুসম্পর্ক থাকা দরকার। এই লক্ষ্যে ছাত্রছাত্রীর সাথে শিক্ষক শিক্ষিকাদের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রত্যেক শ্রেণীকক্ষে সকল শিক্ষক শিক্ষিকার ফোটোগ্রাফ (ছবি) ঐ শ্রেণীকক্ষে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?