কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনজাতি সমাজের সমাজপতিদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার , আগরতলা, ১৬ সেপ্টেম্বর।। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সভাপতিত্বে জনজাতি সমাজের সার্বিক উন্নয়নে জনজাতি সমাজের সমাজপতিদের সাথে এক আলোচনা সভা আজ রাজ্য অতিথিশালার সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়৷ উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া সভায় উপস্থিত ছিলেন৷ এদিনের সভায় জনজাতি সমাজের কাস্টমারি ল, নিজেদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ভাষা, শিক্ষা ও কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবিলা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়৷

সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব জানান, জনজাতি সমাজের প্রধান সমাজপতিদের জন্য মাসিক ২,০০০ টাকা করে ভাতা চালু করার যে ঘোষণা রাজ্য সরকার সমাজপতিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত গত বৈঠকে দিয়েছিল তা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এছাড়া জনজাতি সমাজপতিদের পক্ষ থেকে অন্যান্য যে যে দাবীগুলি রাজ্য সরকারের কাছে জানানো হয়েছিল, তার অনেকগুলিই বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং অনেকগুলি দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷

সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে প্রতিটি পরিবারে পানীয়জল সরবরাহ সুুনিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার অটল জলধারা প্রকল্প রূপায়ণ করছে৷ তিনি জানান, এই পর্যন্ত ১,৭৮,৯২৩টি পরিবারে বিনামূল্যে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে৷ এরমধ্যে গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৯৮,৯০০টি পরিবার বিনামূল্যে পানীয়জলের সংযোগ পেয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের জনজাতি অধ্যুষিত ১২টি ব্লককে অ্যাসপিরেশনাল ব্লক হিসাবে ঘোষণা করে এ সমস্ত ব্লকে বসবাসকারীদের সার্বিক উন্নয়নে সুুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার৷

তিনি বলেন, জনজাতিদের ক’ষ্টি, সংস্ক’তি ও ঐতিহ্য সমাজব্যবস্থাকে একসাথে যুক্ত রেখেছে৷ জনজাতিদের ক’ষ্টি-সংস্ক’তির বিকাশ ও আর্থ সামাজিক মানোন্নয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে৷ কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী জনজাতি সমাজের সমাজপতিদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারির এই চ্যালে’ মোকাবিলায় সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন৷ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক ব্যবহার, ভীড় এড়িয়ে চলা এবং সচেতনতাই করোনার প্রকোপ থেকে আমাদের নিস্তার দিতে পারে৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর মোকাবিলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে৷ অনেকে হোম আইসোলেশনেও রয়েছেন৷ কিন্তু এই সময়ে সবচেয়ে বড় বিষয় হল নিজের অসুুস্থতা লুকিয়ে না রাখা৷ কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নজরে আনতে হবে৷ প্রথমে কোভিড-১৯ এর লক্ষণ আড়াল করে অন্তিম পর্যায়ে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার পর অ্যাম্বলেন্স কল করলে রোগীর ঝঁকি অনেক বেড়ে যায়৷

সভায় উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, জনজাতি সমাজের একতা আমাদের গৌরব৷ সকলকে সাথে নিয়ে এই একতাকে আমরা আরও মজবুত করতে চাই৷ সমাজের উন্নয়নের মধ্যে দিয়েই আমরা গড়ে তুলতে চাই ’এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা’৷ অর্থনৈতিক, সাংস্ক’তিক, শিক্ষা, ভাষা, শিল্প সহ সার্বিক উন্নয়নে জনজাতি সমাজের সমাজপতিদের সহযোগিতা সহমত প্রয়োজন বলে মনে করেন উপমুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, আমাদের ইতিহাস সহানুভূতির, সহিষ্ণুতার৷

একে আরও গৌরবান্বিত করতে চাই আমরা৷ সভায় জনজাতি সমাজের সমাজপতিদের পক্ষ থেকে সর্বসম্মতিক্রমে কয়েকটি দাবি উত্থাপন করা হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই বিষয়ে রাজ্য সরকার মন্ত্রিসভার সাথে আলোচনা করে যা যা করা সম্ভব সে বিষয়ে আন্তরিক উদ্যোগ নেবেন৷ এদিনের সভায় ১১টি জনজাতি সমাজের সমাজপতিগণ উপস্থিত ছিলেন৷

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?