অনলাইন ডেস্ক, ৩ জুন।। প্রতিটি মসজিদে শিবলিঙ্গ খোঁজার দরকার নেই, বৃহস্পতিবার করা হিন্দুত্ববাদী আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের এমন মন্তব্যে অনেকই অবাক হয়েছেন। কেনই বা তার ভিন্ন সুর। খবর ডয়চে ভেলে।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বিরোধ যখন ক্রমশ তীব্র হচ্ছে, তখন নাগপুরে এ নিয়ে মুখ খুললেন মোহন ভাগবত।
আরএসএস প্রধান বলেন, ‘কিছু জায়গা নিয়ে আমাদের বিশেষ শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু তাই বলে প্রতিদিন এই বিষয়ে কথা বলার দরকার নেই? আমরা কেন বিরোধ বাড়াব? কেন প্রতিটি মসজিদে শিবলিঙ্গ খুঁজতে যাব?’
ভাগবত বলেছেন, ‘জ্ঞানবাপীর বিষয়টি চলমান। আমরা ইতিহাস বদল করতে পারব না। আজকের হিন্দু বা আজকের মুসলমানরা তা তৈরি করেনি। আগেকার সময়ে তা ঘটেছে। ইসলাম বিদেশ থেকে এসেছে। আক্রমণকারীরা এনেছে। সেই আক্রমণে আমাদের দেবস্থান ধ্বংস হয়েছে। যারা ভারতকে স্বাধীন দেখতে চেয়েছিল, তাদের মনোবল ভাঙার জন্য এই কাজ করা হয়েছে।’
তার দাবি, ‘হিন্দুরা তাদের বিশেষ শ্রদ্ধার কয়েকটি জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। হিন্দুরা আসলে মুসলিমদের বিপক্ষে নয়। ভারতে মুসলিমরাও একসময় হিন্দু ছিল। তাদের মুসলিম করা হয়েছে স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করার জন্য এবং মনোবল ভাঙার জন্য। তাই হিন্দুরা মনে করে, ধর্মীয় স্থানগুলো আগেকার অবস্থায় ফিরুক।’
নাগপুরে ভাগবত বলেন, ‘একটা রাস্তা বের করা উচিত। দুই পক্ষের সম্মতিতে এই রাস্তা তৈরি হতে পারে। রাস্তা অবশ্য সবসময় বেরোয় না। তখন মানুষ আদালতের দ্বারস্থ হন। সে ক্ষেত্রে আদালতের রায় আমাদের মেনে নিতে হবে। আমাদের আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা চলবে না।’
ভাগবতের দাবি, আরএসএস কোনো প্রার্থনা, পুজো বা উপাসনা পদ্ধতির বিরোধী নয়। সব উপাসনা পদ্ধতিকেই পবিত্র বলে তারা মানেন। তারা বিভিন্ন পদ্ধতিতে উপাসনা করতেই পারেন। কিন্তু তারাও মুনি, ঋষি, ক্ষত্রিয়দের বংশধর। সকলের পূর্বপুরুষ এক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরএসএসের এক কর্মকর্তা এ নিয়ে বলছেন, ‘মোহন ভাগবতের এই কথা বলার অর্থ হলো, কাশী ও মথুরার বাইরে অন্য বিতর্কিত ধর্মস্থান নিয়ে কেউ যাতে বিতর্ক তৈরি না করেন, সেটা নিশ্চিত করা।’
জ্ঞানবাপী মামলা এখন বারাণসীর জেলা আদালতে চলছে। সোমবার আদালত জানিয়ে দেয়, ৪ জুলাই পর্যন্ত মসজিদ কমিটির আবেদন নিয়ে শুনানি হবে না।