অনলাইন ডেস্ক, ২০ মে।। মানবদেহের ঘাড়, পিঠ, কোমর, নিতম্ব ও লেজের অংশকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যাক বলা হয়। ব্যাকে কোনো প্রকার পেইন হলে তাকে ব্যাকপেইন বলা হয়। শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ ব্যাকপেইনের রোগী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায়। ৫ থেকে ১০ ভাগ ব্যাকপেইনের রোগীর অপারেশনের প্রয়োজন হয়। বর্তমান সময়ে ব্যাকপেইন একটি নীরব ঘাতক হিসেবে দেখা দিয়েছে। এমন কোনো পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে পরিবারে কেউ না কেউ ব্যাকপেইনে আক্রান্ত।
কারণ – মানবদেহে ৪০-৪৫ বছর পরবর্তী পর্যায়ে মেরুদণ্ডের হাড়ে ডিজেনারেটিভ চেঞ্জের কারণে, মেরুদণ্ডে নতুন হাড় বৃদ্ধি পেয়ে ব্যাকপেইন হতে পারে।
– অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের ফলে অনেক ক্ষেত্রে পুষ্টিহীনতা ও ক্লান্তিবোধের কারণে ব্যাকপেইন হতে পারে।
– প্রেগনেন্ট ওমেন বা গর্ভবতী নারীর পোশ্চারাল ডিফরমিটির কারণে ঘন ঘন ব্যাকপেইন হতে পারে।
– কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণের ফলে ব্যাকপেইন হতে পারে।
– মেরুদণ্ডে অস্টিওমায়েলাইটিজ রোগের কারণে হাড়ের মধ্যে ফুলে যাওয়ার ফলে ব্যাকপেইন হতে পারে।
– কোনো দুর্ঘটনার কারণে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যাওয়ার ফলে, কিংবা মেরুদণ্ডে অস্টিওপোরোসিসের কারণে কলাপস ফ্র্যাকচারের মাধ্যমে স্নায়ুর ওপর সংকোচনের দ্বারা ব্যাকপেইন হতে পারে।
– পোশ্চারাল ডিফরমিটির কারণে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্ররেখা নষ্ট হয়ে মাসেল স্পাজম বা মাসকুলার ইমব্যালেন্সের কারণে ব্যাকপেইন হতে পারে।
– আপনার বয়স ও কাজের ওপর ভিত্তি করে, অতিরিক্ত চাপের কারণে মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলো যা প্রতিটি কশেরুকার মধ্যে ফিট থাকে, তারা কুশনিং ক্ষমতা হারিয়ে ফেললে ব্যাকবোনের মধ্যে ঘর্ষণের ফলে ব্যাকপেইন হতে পারে।
– কঠোর পরিশ্রমের ফলে ব্যাকপেইন হতে পারে। ভারী বস্তু উত্তোলন, বহন, পিঠে টান লাগা, মোচড় লাগা থেকে ব্যাকপেইন হতে পারে।
– দীর্ঘ সময় ডেস্কে বসে থাকা, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ঘাঁটা, দীর্ঘ সময় ফ্যান বা এসির নিচে সরাসরি বসে থাকার কারণে মেরুদণ্ডের স্ট্রাকচারগুলোর ডিজফাংশনালজনিত কারণে ব্যাকপেইন হতে পারে।
করণীয় – ব্যাকপেইন দূর করতে বসা, দাঁড়ানো ও হাঁটার ক্ষেত্রে যতটি সম্ভব সোজা হয়ে চলাফেরা করুন।
– বিছানায় শোয়ার সময় প্রয়োজনে কোমর, হাঁটু ও পায়ের গোড়ালির নিচে টাওয়েল ও বালিশ দিন।
– দীর্ঘ সময় কাজ করার ক্ষেত্রে মাইনাস ডেস্ক ব্যবহার করুন।
– ভারী বস্তু এক হাতে বহন করবেন না, প্রয়োজনে দুই হাতে ভাগ করে বহন করুন।
– যানবাহন চালনার ক্ষেত্রে সোজা হয়ে বসুন এবং প্রয়োজনে লাম্বার করসেট ব্যবহার করুন।
– ব্যাকপেইন হলে আপনার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে বিশ্রাম নিন। ঠাণ্ডাা বা গরম সেঁক দিন। প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করুন। শেখানো ব্যায়াম করুন।
– ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এলোমেলো ব্যায়াম ও সেঁক আপনার রোগের জটিলতা বাড়িয়ে দিয়ে আপনার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে।