রাজধানী কলম্বোর বাসভবন ছেড়েও রেহাই মিলল না রাজাপক্ষের

অনলাইন ডেস্ক , ১০ মে।। সরকারবিরোধীদের বিক্ষোভ ও সহিংসতার মুখে শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ইতিমধ্যে তার পরিবার নিয়ে রাজধানী কলম্বোর বাসভবন ছেড়েছেন। এরপর তিনি দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরে একটি নৌঘাঁটিতে সপরিবার আশ্রয় নেন। কিন্তু তাও রেহাই মিলল না তার। ওই নৌঘাঁটিও ঘিরে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। রাজধানী কলম্বো থেকে ওই নৌঘাঁটির দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার। সেখানেও বিক্ষোভ চলছে।

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর আজ মঙ্গলবার সকালে রাজাপক্ষের বাসভবনের সামনে একটি হেলিকপ্টার অপেক্ষা করার ভিডিও প্রকাশ করেছে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজনকে বিমানবাহিনীর ওই হেলিকপ্টারে ওঠানো হচ্ছে। তারা মাহিন্দা রাজাপক্ষের পরিবারের সদস্য বলে মনে করা হচ্ছে।

গতকাল তুমুল বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তবে তাতেও জনরোষ কমেনি। পরে আজ মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই সেনা পাহারায় কলম্বোর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। কিন্তু তাও বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে রেহাই পাননি তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মাহিন্দা রাজাপক্ষে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরে একটি নৌঘাঁটিতে সপরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ওই নৌ ঘাঁটিও ঘিরে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা।

গত শুক্রবার থেকে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। বিক্ষোভের লাগাম টানতে এরপর জারি করা হয় কারফিউ। আজ কারফিউ জোরদার করতে হাজারো সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
গতকাল সকালে দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কয়েকটি বাসে প্রধানমন্ত্রীর হাজারো সমর্থক তার সরকারি বাসভবনের কাছে জড়ো হন। তখন মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রায় তিন হাজার সমর্থকের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। তিনি তাদের ‘জাতির স্বার্থ রক্ষার’ প্রতিশ্রুতি দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকেরা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালান এবং তাদের তাঁবু ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় সরকারবিরোধী বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে আগুন ধরিয়ে দেন তারা।

সংঘর্ষ থামাতে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে রাজধানী কলম্বোতে কারফিউ জারি করা হয়। পরে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। গণবিক্ষোভের মুখে একপর্যায়ে পদত্যাগ করেন মাহিন্দা।

আজ প্রধানমন্ত্রীর ছোট ভাই রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাক্ষের সরকার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই মানুষকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সেনাবাহিনী এবং পুলিশকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।

এর ফলে সেনাবাহিনী কাউকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার আগে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত আটকে রাখতে পারবে। ব্যক্তিগত যানবাহনসহ ব্যক্তিগত সম্পত্তি তল্লাশি করতে পারবে। মঙ্গলবার একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, ‘পুলিশ অফিসারদের হাতে গ্রেপ্তার যে কোন ব্যক্তিকে নিকটস্থ থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও কাউকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে থানায় নিয়ে যাবে’।

তবে কিছু রাজনীতি বিশ্লেষক জরুরি ব্যবস্থার অপব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

কলম্বো ভিত্তিক সেন্টার ফর পলিসি অল্টারনেটিভস নামের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের ভাবানি ফনসেকা বলেছেন, ‘যেখানে জরুরি অবস্থা এবং কারফিউ উভয়ই রয়েছে এমন পরিস্থিতিতে নিয়মগুলোর অপব্যবহার হবে না তা নিশ্চিত করার জন্য কে নজরদারি করতে পারবে?’

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?