স্টাফ রিপোর্টার, সোনামুড়া, ৭ মে।। নারী নির্যাতনের ঘটনা সোনামুড়া তে নতুন কোন বিষয় নয়। তবে এবার কার এই ঘটনাটি সভ্য সমাজের কাছে এক ন্যাক্কারজনক ঘটনা। শশুরের কুপ্রস্তাবে ছেলের বউ রাজি না হওয়ায় ছেলের বউকে বাড়ি থেকে মারধর করে বের করে দেয়া বলে অভিযোগ উঠে শশুর আব্দুল মুনাফ এর বিরুদ্ধে। জানা যায় আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে সোনামুড়া থানাধীন নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মুনাফ এর ছেলে জাকির হোসেনের সঙ্গে মেলাঘর ইন্দিরানগর বিল্লাল মিয়ার মেয়ে মর্জিনা বেগমের সাথে মুসলিম শরীয়ত মতে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় । কিছুদিন পর তাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। পরে স্বামী জাকির হোসেন কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি দেয়। ছেলের অনুপস্থিতি কে কাজে লাগিয়ে নিরীহ মর্জিনার উপর পাশবিক লালসার মেটাতে চেয়েছিল শশুর আবদুল মোনাফ। বহুবার প্রস্তাব দেয়া হয় মর্জিনাকে। কিন্তু ছেলের বউ তাতে রাজি না হওয়ায় ,ছেলেকে বউ এর বিপক্ষে লেলিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। কয়েক বছর পূর্বে ছেলেকে চুপিসারে আরেকটি বিয়ে করায় বাবা আবদুল মোনাফ এ খবর জানাজানি হতেই মর্জিনা বেগমের বাবার বাড়ির লোকেরা অভিযোগ করলে গ্রামে সালিশি সভা করা হয়। সেখানে পিতা এবং পুত্রকে ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মর্জিনাকে তালাক দিতে হবে। নতুবা মর্জিনাকে নিয়ে জাকিরের সংসার করতে হবে। এদিকে চার লক্ষ টাকা মর্জিনা কে না দিয়ে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করছিল জাকির হোসেন। কিছুদিন যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় মর্জিনা বেগমের ওপর অমানবিক অত্যাচার, প্রতিদিনই মারধোর করা হতো তাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য । নয়তোবা চলত শারীরিক নির্যাতন। এদিকে দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বেড়েই চলছে ,শুক্রবার বিকেল বেলায় অত্যাচারের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় শশুর শাশুড়ি এবং স্বামী মিলে মর্জিনাকে বেদম মারধর করে এবং তার তিন বছরের পুত্র সন্তান জহির হোসেন কে রেখে দিয়ে মর্জিনা কে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এদিকে মর্জিনা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলে সোনামুড়া ব্রিজ চৌমুহনী তে এসে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। খবর পেয়ে দমকল বিভাগের কর্মীরা সোনামুড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে। এদিকে দমকল দপ্তরের কর্মীদের খোঁজখবর নিয়ে পরিবারকে খবর দেন। খবর পেয়ে মর্জিনা বেগম পিতৃহীন তার মা আমিনা খাতুন হাসপাতালে ছুটে আসে। তার বাবা না থাকায় তাঁর একমাত্র ভরসা তার মা। এদিকে মর্জিনা বেগম কে বেধড়ক মারধরের ফলে সোনামুড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় । এদিকে সোনামুড়া হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান মর্জিনা বেগম সুস্থ হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। এদিকে শনিবার অসহায় মর্জিনার মা আমিনা খাতুন দ্বারস্থ হয়েছেন সোনামুড়া থানার পুলিশের কাছে। আর অন্যদিকে সোনামুড়া হাসপাতালের বেডে শুয়ে নিজের ছেলেকে ফিরে পেতে চাইছেন নির্যাতিতা গৃহবধূ মর্জিনা বেগম। এখন এটাই দেখার বিষয় এই সভ্য সমাজ এবং প্রশাসন কি ফিরিয়ে দিতে পারবে মর্জিনার তিন বছরের পুত্র সন্তানকে। এ দিকে তাকিয়ে আছে মর্জিনা সহ গোটা এলাকার জনগণ ।