স্টাফ রিপোর্টার, আমবাসা, ৫ মে।। লংতরাইভ্যালি মহকুমার রাজধর কাছারিছড়া সত্য মোহন ত্রিপুরার মৃত দুই শিশুর মরদেহ বৃহস্পতিবার ছামনু হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের পর তুলে দেওয়া হয় পরিবারের লোকজনদের হাতে। বুধবারের ঘটনার পর থেকেই গোটা মানিকপুর এলাকা জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। মানিকপুর হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা অনেকটাই ভয়ে রয়েছেন এখনো যদিও বুধবার রাত থেকেই মানিকপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধলাই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অ্যাপেলো কলই জানিয়েছেন এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে ডাঃ বিকাশ দেববর্মার নেতৃত্বে ৮ জনের একটি মেডিকেল টিম ঐ এলাকার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় প্রবেশের মুখে তারা বাধার সম্মুখীন হয় স্থানীয়দের দাঁড়া। পরবর্তী সময় পুলিশের সহায়তায় মেডিকেল টিম ঐ এলাকায় পৌঁছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ধলাই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন ঐ এলাকায় প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য শিবির হচ্ছে চলতি মাসের ২ তারিখেও সেখানে স্বাস্থ্য শিবির হয়। ঐ সময় মৃত ধর্মীতা ত্রিপুরার ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করা হয়েছিল কিন্তু তখন সময় নেগেটিভ রিপোর্ট আসে এই তথ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে রয়েছে। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় আশা কর্মী বুধবার সকালে তাদের বাড়িতে গিয়ে ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করলে তারা ভাই-বোন দুজনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে এবং তারপরেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালে এবং সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে জানা যাবে। এদিকে উত্তেজিত জনতার হাতে গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয় ডাঃ প্রণব দেববর্মা। বর্তমানে আগরতলায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
অপরদিকে ছামনু হাসপাতাল থেকে ডাঃ কেলভিন দেওয়ানকে মানিকপুর হাসপাতলে বদলি করা হলে বাবার অসুস্থতার কথা জানিয়ে তিনি সেখানে যেতে অসম্মতি প্রকাশ করে পরবর্তী সময়ে তড়িঘড়ি বৃহস্পতিবার আমবাসা মহাকুমার গঙ্গানগর হাসপাতাল থেকে ডাঃ সুধাংশু বিশ্বাসকে মানিকপুরে বদলি করা হয়। জানা যায় এদিন আগরতলা থেকে স্টেট ম্যালেরিয়া প্রোগ্রাম অফিসার ডাঃ বিশ্বজিৎ দাস এবং পি এস সি এম ডাঃ সমীর দেব ঘটনাস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমবাসায় আসেন। যদিও তারা পুনরায় আমবাসা থেকেই ফিরে যান।
কারণ তাদের কাছে খবর ছিল সকালে যেসকল স্বাস্থ্যকর্মীদের আমবাসা থেকে পাঠানো হয়েছিল তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছতে পারেননি তাই উনারা ওই এলাকার উদ্দেশ্যে যাননি। কিন্তু উনারা যদি ওই এলাকায় যাওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করতেন তাহলে হয়তো পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত হতে পারতেন এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। তবে বুধবার ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসুক এমনটাই চাইছে সকলে।
তবে হাসপাতলে আক্রমণ, জিনিষপত্র ভাঙচুর এবং চিকিৎসকের ওপর আক্রমণ এসমস্ত ঘটনার পেছনে কোন রাজনৈতিক অঙ্গুলিহেলন রয়েছে কিনা সেটাই প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় সংবাদ লেখা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে একই বাড়ির দুটি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শোকের ছায়া বিরাজ করছে গোটা এলাকা জুড়ে।