অনলাইন ডেস্ক,৩০ এপ্রিল।। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের খলিফা সাহিব মসজিদে শুক্রবারের বোমা বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৬ জনে আর আহতের সংখ্যা ৭৮ জনে পৌঁছেছে।
রমজান মাসের শেষ শুক্রবার উপলক্ষে শুক্রবার জুমার নামাজের পর জিকির চলছিল রাজধানী কাবুলের দক্ষিণাংশে অবস্থিত খলিফা সাহিব মসজিদে। এ সময় দুপুর ২ টার দিকে আকস্মিকভাবে মসজিদের ভেতরে শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটে।
মসজিদটির ইমাম সৈয়দ ফাজল আগা বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, হামলাটি ছিল আত্মঘাতী এবং হামলাকারী সাধারণ মুসলিমের বেশে জুমার নামাজের সময় থেকেই মসজিদে উপস্থিত ছিল। নামাজ শেষে জিকির অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর সে নিজের দেহে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়’।
ইমাম ফাজল আগা আরও জানান, সৌভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে গেলেও বোমার আঘাতে তার ভাতিজা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তিনি বলেন, বিস্ফোণের পর কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল চারদিক, সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল মৃতদেহ। আমি নিজে বেঁচে গেছি, কিন্তু হারিয়েছি আমার সন্তানসম ভাতিজাকে’।
খলিফা সাহিব মসজিদে হামলার দায় এখনও কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বীকার করেনি, তবে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগানিস্তান শাখা ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইএস-কে) এই হামলার জন্য দায়ী।
মুসলিমদের পবিত্র মাস রমজানে আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক দফা বোমা হামলা হয়েছে। এসব হামলায় শতাধিক বেসামরিক আফগান নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও বহু। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব হামলা ঘটেছে আফগানিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিমদের মসজিদে।
তবে হামলাকারীদের কবল থেকে দেশটির সংখ্যাগুরু সুন্নি সম্প্রদায়ের লোকজনও যে মুক্ত নন, তার সর্বশেষ উদাহারণ কাবুলের খলিফা সাহিব মসজিদ। এর আগে গত ২৩ এপ্রিল আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর কুন্দুজের একটি সুন্নি মসজিদে বোমা হামলা হয়েছিল, তাতে নিহত হয়েছিলেন ৩৩ জন।
এরপর গত বৃহস্পতিবার উত্তর শহর মাজার-ই-শরিফে শিয়া মুসলিমদের বহনকারী যাত্রীবাহী দুটি গাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত নয়জন নিহত হন।
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের অন্যতম মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এই হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, অবিলম্বে হামলাকারীকে শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনা হবে।
হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘও। জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিথি মেট নুডডেন এক বার্তায় বলেন, ‘ঘৃণ্য এই ঘটনার নিন্দা জানানোর জন্য কোনো শব্দই যথেষ্ট নয়’।
গত কয়েক সপ্তাহে আফগানিস্তানে যেসব প্রাণঘাতী বিস্ফোরণে বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছেন, এর মধ্যে কয়েকটি হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস।