অনলাইন ডেস্ক, ২৯ এপ্রিল।। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের জন্য মুখিয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে জয়শঙ্কর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ভারত সফরে মোদির আমন্ত্রণ বার্তা পৌঁছে দেন। এ সময় ভূ-রাজনৈতিক বিষয় ও দুই দেশের মধ্যকার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আন্তরিক আলোচনা হয়।
এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এস বলেন, করোনায় থমকে যাওয়া উভয় দেশের মধ্যে যোগাযোগ, কানেকটিভিটি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ নিয়মিত বৈঠকগুলো আরো জোরদার হবে।
তিনি বলেন, যখনই বাংলাদেশি আসি আমার ভালো লাগে। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে আমি ঢাকায় এসেছি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, গত করোনা মহামারির মধ্যে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি এবং আমাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ ছিল। এ সময়ের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অনেক উন্নতি হয়েছে। গত বছর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেছেন। যা সম্পর্কের বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
তিনি বলেন, এবারের সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমাদের মধ্যে যে সম্পর্ক সেটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে আরও এগিয়ে নেবে। আমাদের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আজকের দুপুরে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা সুযোগ পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার ব্যক্তিগত বার্তা ও শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছি।
জয়শঙ্কর বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, তার আসন্ন ভারতের সফরের জন্য আমরা মুখিয়ে আছি। আমরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বাইরে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতেও আলাপ করেছি। আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তার কাছ থেকে অঙ্গীকার পেয়েছি।
তিনি বলেন, সপ্তমবারের মতো জেসিসি বৈঠকের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এ বৈঠকের পর আমাদের সম্পর্কের মাত্রা নতুন স্তরে উন্নীত হবে। আমরা আবার কোভিডের পূর্ব অবস্থার কানেক্টিভিটিতে ফিরে যাব। আমরা ঈদের পর খুব শিগগিরই দু’দেশের মধ্যে বাস-রেল যোগাযোগ চালু করব।
জয়শঙ্কর বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতারা গত বছর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বিশ্বের ১৮টি দেশে মৈত্রী দিবস পালন করেছি, ডিজিটাল প্রদর্শনী করেছি। এগুলো সম্ভব হয়েছিল, আমাদের সম্পর্কের আস্থার কারণে। আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, প্রকল্প উন্নয়নের ঋণ, ভ্রমণ পরিষেবা এবং বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ বিষয়গুলো কোভিডের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরে আমরা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত দুই বছরে আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে প্রকল্পগুলো উন্নয়ন করেছি, তা চালু করতে চাই। ভারত উপ-আঞ্চলিক একাধিক খাতে সংযোগ এবং সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করতে চায়। বিশেষ করে জ্বালানি খাতের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে আমরা আঞ্চলিকভাবে উপকৃত হতে পারি সহযোগিতা করে একসঙ্গে। ভারত এ অঞ্চলে জ্বালানি খাতের বড় উৎপাদক ও ভোক্তা। এই খাতে আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে এ বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। ভারত এ বিষয়ে উপ-আঞ্চলিক ফোরাম, বিবিআইএনের ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় এ ইস্যুতে কাজ করতে চায়। আমি বলতে চাই যে, এই খাতে ভারত কাঠামোগত উন্নয়ন অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ট্রান্সমিশন ভারত নেতৃত্ব দিতে চায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত যেভাবে একসঙ্গে কাজ করেছি এটা বেশ গতিশীল ছিল। এটা একটা ইতিহাস। এর আগে আমরা বহু বড় বিষয়গুলো সমাধান করেছি, আরো যে সব ছোট-খাটো বিষয় রয়েছে সেগুলোও সমাধান হয়ে যাবে।