অনলাইন ডেস্ক, ২৮ এপ্রিল।। ‘আমেরিকার সঙ্গে কোনভাবেই শত্রুতা’ করে টিকে থাকতে পারবে না পাকিস্তান, এমন মন্তব্য করে ইমরান খান সরকারের ত্রুটিপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতির কারণে ইসলামাবাদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পাকিস্তানের সকল মিত্র ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।
গত ১১ এপ্রিল পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়া শাহবাজ শরীফ দুঃখ প্রকাশ করেন যে, ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী সরকার সেসব দেশগুলোকে বিরক্ত করেছিল যারা সবসময় পাকিস্তানকে কঠিন সময়ে সাহায্য করেছিল, বিশেষ করে চীন, সৌদি আরব, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, পাকিস্তান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অবিশ্বাসের অবসান ঘটানো দরকার এবং উভয় দেশই অতীতে কোনো ভুল করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী হাউসে ইফতার সংবর্ধনা চলাকালীন সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর সভাপতি শাহবাজ শরীফ আরও বলেন, ‘পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতা করে টিকে থাকতে পারবে না’।
শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বেই সংসদে এক অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর ক্ষমতা থেকে অপসারিত হয়েছেন ইমরান খান। ইমরান খান অভিযোগ করেছিলেন যে রাশিয়া, চীন এবং আফগানিস্তানের বিষয়ে তার স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতির সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ষড়যন্ত্র করে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
তবে তিনি এর কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দেননি এবং যুক্তরাষ্ট্রও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শাহবাজ শরীফ সাংবাদিকদের সঙ্গে তার প্রায় ঘন্টাব্যাপী কথোপকথনের সময় সব বিষয়ে কথা বললেও তার জোর ছিল দেশের পররাষ্ট্র নীতির ওপর।
শাহবাজ তার আসন্ন সৌদি আরব সফর সম্পর্কেও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে রিয়াদ সফরে সৌদি নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ইস্যু এবং সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিগত সরকারের ত্রুটিপূর্ণ বৈদেশিক নীতির সমালোচনা করে শাহবাজ শরীফ বলেন, পিটিআই সরকার প্রথমে ২০১৬ সালে কাতারের সঙ্গে পাকিস্তানের গ্যাস কেনার চুক্তির দিকে আঙুল তুলে কাতারের রাজপরিবারকে বিরক্ত করেছিল এবং তারপরে তারা চীনের সঙ্গেও একই কাজ করেছিল। উচ্চাভিলাষী চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের অধীনে পাকিস্তানে চালু হওয়া চীনা প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল।
ইমরান খান সরকারের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, সৌদি আরব পাকিস্তানকে বাকীতে তেল দিয়েছিল, পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অর্থ জমা করেছিল। অথচ পিটিআই সরকার সৌদি আরবকে বলেছিল, ‘আমরা আপনাদেরকে ছাড়াই কাশ্মীর ইস্যু সমাধান করতে পারি’।
ইমরান সরকারের আফগান নীতি সম্পর্কে শরীফ বলেন, ‘যা আফগানিস্তানের জন্য ভালো, তা পাকিস্তানের জন্য ভালো এবং যা পাকিস্তানের জন্য ভালো তা আফগানিস্তানের জন্য ভালো’।