উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে ১৭ এপ্রিল শুরু হচ্ছে তিনদিন ব্যাপী দ্বিতীয় ভারত বাংলা পর্যটন উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১২ এপ্রিল।। ভারত – বাংলাদেশের মধ্যে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অনেকটাই সামঞ্জস্য রয়েছে। বিশেষ করে ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের অনেক ক্ষেত্রেই মিল রয়েছে। তাই এই বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্য নিয়ে ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে তিনদিন ব্যাপী দ্বিতীয় ভারত বাংলা পর্যটন উৎসব ২০২২। ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে এই উৎসবের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। আজ দুপুরে গীতাঞ্জলি ট্যুরিজম গেস্ট হাউজে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পর্যটন মন্ত্রী প্রনজিত সিংহরায়। পর্যটন মন্ত্রী আরো জানান, তিনদিন ব্যাপী পর্যটন উৎসবে বাংলাদেশের এক প্রতিনিধি দল সহ পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির ট্যুর অপারেটরগণ অংশগ্রহণ করবেন। অংশ নেবেন হোটেল মালিক, পর্যটন আধিকারিক, স্বাধীনতা সংগ্রামী, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। আর এই সময়ে বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটরদের সাথে পর্যটন ক্ষেত্রে রাজ্যের একটি মৌ স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যটন মন্ত্রী প্রনজিত সিংহরায় বলেন, ভাষা, সংস্কৃতি ছাড়াও দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কও রয়েছে।

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এই রাজ্যের অগণিত মানুষ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এজন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছে। এরমধ্যে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বিলোনিয়ার চৌত্তাখলার মৈত্রী উদ্যান ভারত বাংলা দুদেশের সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। বাংলাদেশের মানুষ ত্রিপুরা সফরে এলে সেটা একবার ঘুরে দেখে আসেন। সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটন মন্ত্রী জানান, আগামীতে ফেনী নদীর উপর গড়ে উঠা সেতু চালু হলে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। আগে থেকেই আগরতলা – ঢাকা বাস সার্ভিস চালু রয়েছে।

এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকার অনুরোধ জানিয়েছে চিটাগাং (চট্টগ্রাম) থেকে কুমিল্লা হয়ে আগরতলা পর্যন্ত নতুন বাস সার্ভিস চালু করার। এই ইস্যুতে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী জানান, এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, আগামীতে ঢাকা চিটাগাংয়ের সাথে আকাশপথে যুক্ত হবে রাজ্য। এছাড়া নিশ্চিন্তপুর হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ হচ্ছে। এর পাশাপাশি জলপথে দাউদকান্দি থেকে সোনামুড়া হয়ে উদয়পুরের মহারাণী পর্যন্ত নৌ পরিষেবা যুক্ত হবে।পর্যটন মন্ত্রী প্রনজিত সিংহরায় ১৭ এপ্রিল থেকে আয়োজিত তিনদিনের ভারত বাংলা পর্যটন উৎসবকে সফল করার জন্য আহ্বান জানান।

তিনি জানান, উদ্বোধনের দিন সকালে আগরতলায় রোড শো করা হবে। উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রকমারি খাদ্য উৎসব। ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র চৌত্তাখলার ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যান, ছবিমুড়া, নীরমহল, সিপাহীজলা, উদয়পুর সহ একাধিক দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখানো হবে। ১৯ এপ্রিল গীতাঞ্জলি পর্যটন আবাসের মিলনায়তনে দুই দেশের পর্যটন বিষয়ক আদান-প্রদান ও ব্যবসা শ্রীবৃদ্ধির লক্ষ্যে ট্যুর অপারেটর, হোটেল মালিক এবং দুই দেশের পর্যটন আধিকারিকগণ মতবিনিময় সভায় মিলিত হবেন।

প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে পর্যটনের উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পর্যটকদের দীর্ঘদিনের চাহিদা অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লাতে ভিসা অফিস খোলা হয়েছে। এতে রাজ্যে বাংলাদেশের পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন পর্যটন মন্ত্রী। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা তড়িৎ কান্তি চাকমা সহ পদস্থ আধিকারিকগণ।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?