স্টাফ রিপোর্টার, ধর্মনগর, ৬ এপ্রিল।। দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে উত্তর ত্রিপুরা, ঊনকোটি এবং ধলাই জেলা পিছিয়ে ছিল। এই তিন জেলায় উন্নয়নমূলক কাজ না করার একটা প্রবণতা ছিল আগে।
কিন্তু ২০১৮ সালে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি এই তিন জেলার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে শুরু হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ। উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়ার অন্যতম দৃষ্টান্তই আজকের এই শিল্প পরিকাঠামোর উন্নয়ন। আজ উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরের মিশনটিলায় শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়নে নবনির্মিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল শেডের উদ্বোধন করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথাগুলি বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তিনি বলেন, আগে যুবকদের কাজের সুযোগ ছিল না।
কিন্তু বর্তমান সরকার ২০১৯-২০ সালে এমএসএমই প্রকল্পে এই শিল্প ইউনিটটি স্থাপনের জন্য ১০ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছেন। এরফলে এখানে এই শিল্প ইউনিটটি গড়ে তোলা হয়েছে। ত্রিপুরার সার্বিক উন্নয়নে এই শিল্প ইউনিটও ভূমিকা নেবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, উত্তর ত্রিপুরা জেলা আগর চাষের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। একসময় এই আগর অবৈধভাবে রাজ্যের বাইরে চলে যেতো। ফলত রাজ্যের আগরচাষীরা তার মূল সুবিধাগুলি পেতো না।
কিন্তু বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর রাজ্যের আগরচাষীদের লাভবান করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই শিল্প ইউনিটটি গড়ে তোলার ফলে উত্তর জেলার জনগণের সার্বিকভাবে উন্নয়ন হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন। বাউন্ডারি ওয়ালে ঘেরা এই শিল্প ইউনিটে চারটি বড় আকারের ইন্ডাস্ট্রিয়াল শেড, প্রশাসনিক ভবন, সোলার লাইট, জলের ব্যবস্থা ইত্যাদি রয়েছে।
প্রশাসনিক ভবনে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এটিএম, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কক্ষ, সভাকক্ষ ইত্যাদি ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকাঠামো রয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী ধর্মনগরের দেওয়ানপাশাতে একটি এগ্রোটেক মডার্ন রাইস মিলের উদ্বোধন করেন। ৬ একর জমিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে এই রাইসমিল স্থাপন করতে বায় হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।
ভারত সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্পদ যোজনায় গড়ে উঠা এই অত্যাধুনিক রাইসমিলটি প্রতিদিন ১৬০ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন। এই প্রকল্পটির মাধ্যমে এলাকার প্রায় ৬০০ কৃষক উপকৃত হবে। এছাড়া এই প্রকল্পটিতে সরাসরি ৮০ জন বেকার কাজের সুযোগ পেতে পারেন। এই প্রকপে ৫ কোটি টাকা ভর্তুর্কি রয়েছে। রাইসমিলটি উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার কৃষকদের থেকে সহায়কমুলো ধান ক্রয় করছে। কৃষকদের আয় বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, কৃষকদের আয় আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রকল্পটিতে এলাকার কৃষকরা লাভবান হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন। এদিন দুটি অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন টিআইডিসির চেয়ারম্যান টিংকু রায়, বিশিষ্ট সমাজসেবী মলিনা দেবনাথ, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা স্বপ্না দেবনাথ, জেলাশাসক ও সমাহর্তা নাগেশ কুমার বি প্রমুখ।