অনলাইন ডেস্ক, ৩০ মার্চ।। যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আবারও সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মধ্যস্থতায় খোদ তুর্কী প্রেসিডেন্টও অংশ নিয়েছেন।
দুটো দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে ইস্তাম্বুলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে এর আগেও সেখানে দুপক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে।
আলোচনা শুরুর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এরদোয়ান রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ‘যুদ্ধের এই ট্রাজেডি’ বন্ধ করার জন্য।
ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল চায় যুদ্ধবিরতির সমঝোতা।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানও যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য যুদ্ধরত দুটো পক্ষের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট ফলাফলে’ পৌঁছানোর জন্য এখনই সময়।
তুর্কী নেতার মুখ থেকে এধরনের বক্তব্যের পরেও বৈঠক যে খুব বেশি ফলপ্রসূ হবে সেরকম কিছু আশা করা হচ্ছে না।
ইউক্রেন বলছে, ন্যাটোতে যোগ না দিয়ে তাদেরকে নিরপেক্ষ থাকার যে দাবি মস্কো জানিয়েছে তারা সেটি বিবেচনা করবে। তবে তারা তাদের ভৌগলিক অখণ্ডতা অথবা সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপোস করবে না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তার দেশের নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়ার কথা বললেও তিনি বলেছেন এবিষয়ে গণভোট হতে হবে এবং সেটা হবে রুশ সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরেই।
সেটা হতে কতো সময় লাগবে এবং ক্রেমলিন এটা মেনে নেবে কি না তা বলা কঠিন। তুর্কী সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে মঙ্গলবারের আলোচনা তিন ঘণ্টা ধরে চলে।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নিরাপত্তার গ্যারান্টির ব্যাপারে তারা নতুন ধরনের ব্যবস্থার কথা তুলে ধরেছেন যাতে তুরস্কের মতো দেশগুলো তাতে নিশ্চয়তাদানকারীর ভূমিকা পালন করবে।
যুদ্ধের সর্বশেষ খবর
ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে রুশ হামলা অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণের শহর মিকোলাইভে আঞ্চলিক সরকারের অফিসে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কুড়িজনেরও বেশি।
কর্মকর্তারা বলছেন, উদ্ধারকারীরা আংশিক বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে ১৮ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন।
হামলায় ভবনটির ভেতরে বিশাল আকারের একটি গর্ত তৈরি হয়েছে। ধ্বংস হয়ে গেছে আঞ্চলিক গভর্নর ভিটালি কিমের দপ্তর। হামলার সময় তিনি অফিসে ছিলেন না।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় লুহান্সক এবং দনিয়েৎস্ক অঞ্চলেও যুদ্ধ চলছে।
উত্তরের চেরনিহিভ শহরেও রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। শহরের মেয়র বলছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তার শহরের চার হাজারের মতো বাসিন্দা নিহত হয়েছে।
খারকিভ শহরেও রাশিয়ার গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
মূল লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে: রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু প্রায় পাঁচ সপ্তাহ ধরে চলা তাদের সামরিক অভিযানের ব্যাপারে কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, এই অভিযানের প্রথম পর্যায়ে তাদের প্রধান প্রধান যেসব লক্ষ্য ছিল সেগুলো তারা অর্জন করেছেন।
পশ্চিমা বিশ্লেষকরা এতোদিন যা বলে আসছিলেন তার সঙ্গে মি. শোইগুর এই বক্তব্যের মিল নেই।
পশ্চিমা বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরোধের মুখে পড়ার পর রুশ বাহিনী পিছু হঠতে শুরু করেছে এবং তারপর ক্রেমলিন তাদের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে এনেছে।
শোইগু বলেন, ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতার উল্লেখযোগ্য ক্ষতিসাধন হয়েছে। তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য রুশ-ভাষীদের অঞ্চল দনবাসকে ভাষায় ‘মুক্ত করা’।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করায় কিয়েভের পশ্চিমা মিত্রদেরও সমালোচনা করেছেন।
[contact-form][contact-field label=”Name” type=”name” required=”true” /][contact-field label=”Email” type=”email” required=”true” /][contact-field label=”Website” type=”url” /][contact-field label=”Message” type=”textarea” /][/contact-form]