স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৯ মার্চ।। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের ঐকান্তিক চেষ্টায় লাইট হাউজ প্রজেক্ট গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে। অত্যাধুনিক এই প্রকল্পে আর্থিকভাবে দুর্বল মানুষ মাথা গোঁজার জন্য স্থায়ী একটি ঠিকানা পাবেন। অনেকের আগরতলা শহরে বাড়ি তৈরির ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কারণে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন না। তাদের কথা ভেবেই সরকার এই অত্যাধুনিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে।
আজ আগরতলার মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে লাইট হাউস প্রজেক্টে লটারির মাধ্যমে ফ্ল্যাট বরাদ্দ কর্মসূচির উদ্বোধন করে একথা বলেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী সান্তনা চাকমা।নগরোন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিব কিরন গিত্যে, দপ্তরের অধিকর্তা তমাল মজুমদার সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ। উদ্বোধকের বক্তব্যে নগরোন্নয়ন মন্ত্রী সান্তনা চাকমা আরো বলেন, এই লাইট হাউস প্রজেক্টে প্রায় ১ হাজার ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। দুটি পর্যায়ে বেনিফিসিয়ারিদের ফ্ল্যাট বন্টন করা হবে। এক্ষেত্রে বছরে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জনকারীদের একটি ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে বছরে ৩ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের অপর ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। এই সরকার বিভিন্ন দিক দিয়ে মানুষকে আত্মনির্ভর করার উদ্যোগ নিয়েছে। শুধু সরকারি চাকরি নয়, আরো বিভিন্ন উপায়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার প্রয়াস নিয়েছে রাজ্য সরকার। মহিলাদের স্বশক্তিকরণে রাজ্য সরকার বিশেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। চাকরির ক্ষেত্রেও মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করেছে সরকার।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের বাজেটেও তার প্রতিফলন লক্ষ্য করা গিয়েছে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও এখন বিভিন্ন দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন স্বসহায়ক দলের মাধ্যমে মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া স্কিল ডেভেলপমেন্টের মহিলাদের নানা প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকারের লক্ষ্যই হচ্ছে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ এবং নেশামুক্ত ভারত ও নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তোলা। এজন্য নেশার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পাশাপাশি অভিভাবকদের আরো সতর্ক ও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী। সেই সাথে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে লাইট হাউজ় প্রজেক্টের বাস্তবায়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই গোটা প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রাজ্য সরকার জমি দিয়েছে। এক একটি ফ্ল্যাটের মূল্য পড়বে ১৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। জমির দাম সহ সেই মূল্য গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। কিন্তু বেনিফিসিয়ারিদের নির্ধারিত মূল্য দিলেই হবে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোর কথা মাথায় রেখে বাকী অর্থ বহন করবে সরকার। তিনি বলেন, স্বচ্ছতার সাথে ঘর বন্টন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গোটা প্রক্রিয়া ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেনিফিসিয়ারিদের জন্য দুই ক্যাটাগরিতে ফ্ল্যাটের মূল্য নির্ধারিত হয়েছে যথাক্রমে ৫ লক্ষ টাকা এবং ৭ লক্ষ টাকা। বেনিফিসিয়ারিদের কথা ভেবে দুই কিস্তিতে ফ্ল্যাটের অর্থ নিচ্ছে সরকার। যারা আগে টাকা দিয়েছেন তাদের মধ্যে এদিন লটারির মাধ্যমে ফ্ল্যাটের বরাদ্দ করে দেওয়া হচ্ছে। লটারির মাধ্যমে ফ্ল্যাট নম্বর এবং কাগজপত্র হাতে পেলে ব্যাঙ্ক থেকে ঋন পেতে সুবিধা হবে বেনিফিসিয়ারিদের। উল্লেখ্য, লাইট হাউজ প্রকল্পে ঘরের জন্য এর আগে একবার লটারির মাধ্যমে ১৫০ জনকে ঘর বন্টন করা হয়।