অনলাইন ডেস্ক, ২৪ মার্চ ।। মাঝে গতি কমলেও দক্ষিণ কোরিয়ায় ফের মাথাচাড়া দিয়েছে করোনাভাইরাস। সুনামির গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। বুধবার ‘দ্য কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি’ (কেডিসিএ)-র প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে সেই চিত্র। এ দিন প্রকাশিত গত ২৪ ঘণ্টার রিপোর্টে দেখা যায়, একদিনে নতুন করে পাঁচ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন!
বর্তমানে সে দেশের সংক্রমণ-পরিস্থিতি বেশ গুরুতর। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সেখানে গড়ে পাঁচ জনের মধ্যে এক জন করোনায় সংক্রমিত। কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও উত্তরোত্তর বাড়ছে। গত ১৫ দিনে যা হাজারের নীচে নামার সুযোগ পায়নি বলেই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাড়ছে মৃত্যুও। মঙ্গলবারই প্রাণ হারিয়েছেন ২৯১ জন সংক্রমিত। সুষ্ঠু ভাবে লাশ সৎকার কর্ম চালিয়ে যেতে দেশ জুড়ে প্রায় ৬০টি শ্মশানকে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশিক্ষণ খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
হঠাৎ এই সংক্রমণ বৃদ্ধির পিছনে মূলত রয়েছে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভেরিয়েন্ট বা উপ-ধরন ‘স্টেলথ’। মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। সংক্রমিত হয়ে কিংবা সংক্রমিতের সংস্পর্শে এসে নির্জনবাসে রয়েছেন কমপক্ষে ১,৮০০,০০০ মানুষ।
প্রসঙ্গত, দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮৬.৬ শতাংশই প্রতিষেধকের দুটি ডোজ পেয়েছেন। এমনকি বুস্টারও পেয়েছেন ৬৩.২%। তা সত্ত্বেও সংক্রমণ পরিস্থিতি এই গুরুতর দিকে মোড় নেওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিশেষজ্ঞদের কপালে।
যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার পরিস্থিতিকে বিচ্ছিন্ন করে না-দেখারই আর্জি জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। সংস্থার পরামর্শ, বিধি শিথিলের দিকে এখন না-হাঁটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে বিশ্বের পক্ষে।
তারা জানায়, ইতিমধ্যেই পরীক্ষার বহর কমিয়ে এনেছে বেশ কিছু দেশ। বর্তমান অবস্থার নিরিখে যা পুরোপুরি এড়িয়ে চলার পক্ষে সওয়াল করেছে তারা।
কারণ পরীক্ষা কম হওয়ায় বহু মানুষের সংক্রমণ ধরাই পড়ছে না। এবং তা হয়তো ছড়িয়ে পড়ছে সহজেই। পাশাপাশি নতুন করে সংক্রমিতদের সংখ্যা বিশেষ ভাবে বিশ্লেষণ করে চলারই পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সংস্থা সূত্রের খবর, চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো এশীয় দেশগুলির পাশাপাশি ফ্রান্স, ইটালি, ব্রিটেন এবং জার্মানির মতো ইউরোপীয় দেশগুলিতেও নজরে এসেছে সংক্রমণবৃদ্ধি।
চীনের বিভিন্ন শহরের মতো সাংহাই শহরেও হু হু করে বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। উপসর্গযুক্তেরা যেমন রয়েছেন, তেমনই বাড়ছে উপসর্গহীন কোভিড পজিটিভদের সংখ্যাও। দৈনিক আক্রান্ত সেখানে এক হাজার পার করায় গুজব ছড়িয়েছিল অন্যান্য শহরের মতো সাংহাইয়েও কড়া লকডাউন বিধি জারি করা হয়েছে। কিন্তু বুধবার সে কথা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।
এ দিকে, ছয় বছরের নীচের শিশুদের জন্য তাদের তৈরি টিকার অন্তর্বতী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করল টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা মডার্না। রিপোর্টে তাদের দাবি, পরীক্ষায় উঠে এসেছে শিশুদের শরীরে করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগিতা দেখিয়েছে টিকাটি। এবং তা নিরাপদও প্রমাণিত হয়েছে। ২৮ দিনের ব্যবধানে টিকাটির দুটি ডোজ দিয়ে হবে।