অনলাইন ডেস্ক, ২৪ মার্চ ।। রাশিয়ার বন্ধু নয় সম্প্রতি এমন কয়েকটি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছিল রাশিয়া। ওই দেশগুলো ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার সঙ্গে বৈরী আচরণ করছিল। তবে বন্ধু না হলেও তাদের কাছেও গ্যাস বিক্রি করবে রাশিয়া। অবশ্য এবার এ দেশগুলোতে গ্যাস বিক্রির ক্ষেত্রে নতুন শর্ত দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বুধবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া তার ব্যবসায়িক অংশীদারদের আগের মতোই গ্যাস সরবরাহ করে যাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের যে দাম, সেই দামেই গ্যাস বিক্রি করবে রাশিয়া। তবে গ্যাসের বিনিময়মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিদেশি ক্রেতা, যারা আমাদের কাছ থেকে গ্যাস কিনতে চায়, তাদেরকে সেই গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করতে হবে রুবলে’।
‘তাই সব বিদেশি ক্রেতাকে গ্যাস কেনার আগে আমাদের মুদ্রা বাজার থেকে রুবল কেনার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এটি খুবই সহজবোধ্য ও স্বচ্ছ একটি পদ্ধতি’।
পুতিন জানান, রাশিয়ার সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে প্রায় এক সপ্তাহ আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশটির তেল-গ্যাস উত্তোলন ও বিপণনকারী রাষ্ট্রয়ত্ত কোম্পানি গ্যাসপ্রমকেও সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তাদের মিত্র দেশগুলো।
এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্যবসা গোটাতে বাধ্য হয়েছে রাশিয়ার প্রধান ব্যাংকগুলো, আন্তর্জাতিক মুদ্রা লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে সম্পদ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ছিল, সেসবও জব্দ করা হয়েছে।
এসব নিষেধাজ্ঞার কবল থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতেই এ পদাক্ষেপ নিল রাশিয়া।
গত ৮ মার্চ বিশ্বের যেসব দেশ ও অঞ্চল রাশিয়ার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ নয়, সেসবের একটি তালিকা প্রকাশ করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই তালিকায় আছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮ টি সদস্যরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশ।
এ বিষয়ে ওই দিনই রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন থেকে একটি ডিক্রি জারি করা হয়েছিল। সেই ডিক্রি অনুযায়ী, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ নয়’- তালিকায় থাকা দেশ ও অঞ্চলসমূহের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে এখন থেকে রুশ মুদ্রা রুবল ব্যবহার করা হবে।
এছাড়া, এই দেশ ও অঞ্চলসমূহের কোনো কোম্পানির সঙ্গে যদি রুশ কোনো কোম্পানি বাণিজ্যিক চুক্তি করতে চায়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রুশ কোম্পনিকে অবশ্যই সরকারের অনুমোদন নিতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ডিক্রিতে।
রাশিয়ার জ্বালানি গ্যাসের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইউরোপ। এই মহাদেশের মোট বার্ষিক গ্যাসের চাহিদার ৪০ শতাংশ সরবরাহ আসে রাশিয়া থেকে।
রাশিয়ার বন্ধু নয়, এমন দেশের তালিকায় রয়েছে আলবেনিয়া, অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো, আইসল্যান্ড, কানাডা, লিশটেনস্টাইন, মাইক্রোনেশিয়া, মনাকো, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে।
এ ছাড়া এ তালিকায় আরও রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, সান মারিনো, উত্তর মেসিডোনিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, ইউক্রেন, মন্টেনেগ্রো, সুইজারল্যান্ড ও জাপান।
[contact-form][contact-field label=”Name” type=”name” required=”true” /][contact-field label=”Email” type=”email” required=”true” /][contact-field label=”Website” type=”url” /][contact-field label=”Message” type=”textarea” /][/contact-form]