অনলাইন ডেস্ক, ২৩ মার্চ ।। মঙ্গলবার ফের ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্মানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্রান্স। প্রায় এক ঘণ্টার টেলিফোন বৈঠকে কী কী আলোচনা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে ইউক্রেন সংকট যে পুরো ইউরোপে নিরাপত্তার অভাব তৈরি করেছে, মাখোঁ তা পুতিনকে জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও ফ্রান্স দাবি করেছে। যদিও পুতিন এখনো যুদ্ধবিরতিতে সম্পূর্ণ রাজি হননি বলেই জানানো হয়েছে।
এদিনের বৈঠক নিয়ে রাশিয়া কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ফ্রান্স জানিয়েছে, বৈঠক একেবারে ভেস্তে যায়নি। আগামীতে ফের আলোচনার রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে। মাখোঁ জানিয়েছেন, তিনি তার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও মাখোঁ কথা বলেছেন বলে তার অফিস জানিয়েছে।
রাশিয়ার পাশে দাঁড়াল সার্বিয়া :
ইউক্রেনে রাশিয়ার যে অভিযান চলছে, সার্বিয়া তা সমর্থন করে না। কিন্তু তাই বলে রাশিয়ার উপর যেভাবে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে, সার্বিয়া তা-ও সমর্থনযোগ্য বলে মনে করে না বলে জানিয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ভুলিন। পশ্চিম যেভাবে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে এবং চাপাচ্ছে, তা তিনি ‘রাশিয়া-বিরোধী হিস্টিরিয়া’ বলে মনে করেন।
এদিন স্পষ্ট করেই সার্বিয়া জানিয়ে দিয়েছে, তারা রাশিয়ার শক্তিশালী সঙ্গী। এই পরিস্থিতিতেও তারা রাশিয়ার সঙ্গ ছাড়বে না। সার্বিয়াও দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে চায়। কিন্তু তার জন্য তারা রাশিয়ার সঙ্গ ছাড়বে না বলে এদিন দেশটির মন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। বেলারুশ ছাড়া এই প্রথম ইউরোপের কোনো দেশ এত স্পষ্ট করে রাশিয়ার পাশে থাকার কথা জানালো।
বেলারুশের পরিস্থিতি :
বেলারুশের রাষ্ট্রপ্রধান লুকাশেঙ্কো রাশিয়াকে সবরকম সাহায্য করছেন। ইউক্রেন আক্রমণের জন্য তারা রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে নিজেদের সীমান্তও খুলে দিয়েছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বেলারুশে সরকারবিরোধী গোষ্ঠী আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। দেশ ছেড়ে পালানো বেলারুশের অন্যতম বিরোধী নেত্রী স্বেতলানা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেন জয় না পেলে বেলারুশও বর্তমান শাসকের হাত থেকে নিস্তার পাবে না’।
বেলারুশের বিরোধী শিবির ইউক্রেনের পক্ষে আছে বলে এদিন জানিয়েছেন স্বেতলানা। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে জিতে যায়, তাহলে লুকাশেঙ্কো নিজেকে আরো ক্ষমতাবান বলে মনে করবেন। এ কারণেই তারা ইউক্রেনকে সমর্থন করছেন বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন বেলারুশের বিরোধী নেত্রী।
তার বক্তব্য, বেলারুশের ভেতরে বহু মানুষ এই যুদ্ধের সমর্থক নন। কিন্তু প্রশাসনের অত্যাচারের ভয়ে তারা চুপ করে আছেন। স্বেতলানার আশা, রাশিয়া এই লড়াই পরাস্ত হলে বেলারুশে আটকে থাকা রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির রাস্তা খানিকটা সহজ হবে। আর উল্টোটা ঘটলে তাদের আরো বহু বছর জেলে পচে মরতে হবে।