অনলাইন ডেস্ক, ১৪ ফেব্রুয়ারী।। তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের যে ১ হাজার কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আটকা পড়েছে তা থেকে ৭১০ কোটি ডলার ৯/১১-র হামলাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিনিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্তকে সকল আফগান নাগরিকের বিরুদ্ধে নৃশসংতা বলে অভিহিত করেছেন আফগানিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই।
কারজাই এক সংবাদ সম্মেলনে আমেরিকানদের এবং বিশেষ করে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হাজার হাজার পরিবারের কাছে আহবান জানিয়েছেন, তারা যাতে গত সপ্তাহের ওই আদেশ প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চাপ দেন। কারজাই বলেন, ‘আফগানিস্তানের জনগণ আমেরিকান জনগণের বেদনা গভীরভাবে অনুভব করে। যারা ৯/১১-র ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবার এবং প্রিয়জনদের ব্যথায় তারাও ব্যাথিত’।
‘আমরা তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই, কিন্তু আফগান জনগণ আপনজন হারানো মার্কিন পরিবারগুলোর মতোই ক্ষতিগ্রস্থ। তাদের নামে আফগানিস্তানের জনগণের অর্থ আটকানো বা তাদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করা অন্যায় ও অন্যায্য এবং আফগান জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংসতা’।
তিনি বলেন, ‘এই অর্থের মালিক তালেবান বা কোনো সরকার নয় বরং আফগান জনগণই এই অর্থের মালিক’। গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এক আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে রক্ষিত আফগান সম্পদ থেকে ৭১০ কোটি ডলার ৯/১১-র সন্ত্রাসী হামলা সহ বিভিন্ন হামলার শিকার এবং অসহায় আফগানদের জন্য মানবিক সহায়তার কাজে ব্যবহার করার জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫০ কোটি ডলার দেওয়া হবে শুধু ৯/১১-র হামলায় নিহতদের পরিবারের জন্য। তবে ৯/১১-র হামলায় নিহতদের পরিবার ৭১০ কোটি ডলার দাবি করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১ হাজার কোটি ডলার জমা ছিল। গত বছর আগস্টে তালেবান বাহিনী দেশটির জাতীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর সেই অর্থ জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ট্রেজারি বিভাগ। জব্দ করা ওই অর্থ কোন খাতে ব্যবহার করা হবে- তা নিয়ে এতদিন চাপে ছিল মার্কিন সরকার।
কারণ, ট্রেজারি বিভাগের নির্দেশনা ছিল- সন্ত্রাসবাদের জন্য সহায়ক হয়- এমন কোনো ক্ষেত্রে এই অর্থ ব্যবহার করা যাবে না। আফগানিস্তানের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর। কিন্তু গত বছর ১৫ আগস্ট তালেবান বাহিনী জাতীয় ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে আর্থিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতা দেশগুলো। ফলে, মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশটির অর্থনীতি।