অনলাইন ডেস্ক, ১১ ফেব্রুয়ারী।। বলিউডের রক্ষণশীল স্বভাবের জন্য ‘নিষিদ্ধ প্রেম ও কাম’ নিয়ে তেমন কোনো সিনেমা হয় না বলে অভিযোগ আছে। বেশির ভাগ বলিউড সিনেমার বিষয়বস্তুই দুজন বিবাহিত বা অবিবাহিত মানুষের প্রেম।
চলচ্চিত্র বিশ্লেষকেরা মনে করেন, তার একটা বড় কারণ হয়তো পরকীয়ার মতো বিষয় দর্শকেরা গ্রহণ করবেন কিনা এই দ্বন্দ্ব। এই জন্য ‘গেহরাইয়াই’-র ঝলক দেখে দর্শক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ‘গেহরাইয়া’ ছবিতে একাধিক ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করেছেন দীপিকা পাড়ুকোন এবং সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী। তবে গেহরাইয়াই প্রথম নয়; বলিউডে নিষিদ্ধ প্রেম এবং সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে আগেও ছবি হয়েছে। এমন পাঁচ ছবির কথা তুলে ধরা হলো- এই তালিকায় প্রথমেই আসে ১৯৬৫ সালের বিজয় আনন্দ পরিচালিত ছবি ‘গাইড’। গাইডের প্রধান চরিত্রে ছিলেন দেব আনন্দ এবং ওয়াহিদা রহমান। স্বামীকে এড়িয়ে দেব আনন্দের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত প্রেমে জড়ান ছবির নায়িকা। ছবিটি সেই সময়ে সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতে নেয়। ১৯৮১ সালে মুক্তি পায় যশ চোপড়ার অন্যতম সেরা ছবি ‘সিলসিলা’। এই ছবিতে অভিনয় করেন অমিতাভ বচ্চন, রেখা, জয়া বচ্চন, শশী কাপুর প্রমুখ অভিনেতারা। ‘সিলসিলা’ সেই সময়র সাপেক্ষে যথেষ্ট সাহসী ছবি, বক্স অফিসে তেমন সাফল্যও পায়নি। ‘সিলসিলা’ ছবিতে দেখানো হয় জয়া বচ্চনের সঙ্গে বিয়ের সাত বছরে পরেও অমিতাভ এবং রেখার বিবাহবহির্ভূত প্রেম। সেই সময় এই ছবি যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি করে। যদিও এই ছবিতে জয়া বচ্চন এবং রেখার পরিবর্তে স্মিতা পাটিল এবং পারভীন ববিকে নেওয়ার কথা ছিল, পরে অমিতাভের সঙ্গে আলোচনা করে যশ চোপড়া সিদ্ধান্ত বদলান। বিবাহবহির্ভূত প্রেম নিয়ে এরপরই আসে মহেশ ভট্টের ‘অর্থ’ ছবির নাম। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন কুলভূষণ খরবন্দা এবং শাবানা আজমি। অন্য চরিত্রে ছিলেন স্মিতা পাটিল এবং রাজ কিরণ। অনেকেই দাবি করেন ‘অর্থ’ ছবির কাহিনি কিছুটা মহেশ ভট্টের ব্যক্তিগত জীবন থেকে অনুপ্রাণিত। তার এবং পারভীন ববির প্রেমকে তিনি ছবিতে কুলভূষণ খরবন্দা এবং স্মিতা পাটিলের বিবাহবহির্ভূত প্রেমের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন। ছবিতে শাবানা আজমি তার স্বামী কুলভূষণের পরকীয়ার কথা জানতে পেরে তার সঙ্গে বিচ্ছেদ করে স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকার জীবন বেছে নেন। ১৯৮৭ সালে ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সম্পর্ক নিয়ে গুলজার বানান ‘ইজাজত’। সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে যেটি বলিউডের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ছবি। এই ছবির প্রধান চরিত্রে ছিলেন রেখা, নাসিরুদ্দিন শাহ এবং অনুরাধা পটেল। নাসিরুদ্দিন শাহ দুজনের সঙ্গেই একই সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সম্পর্ক নিয়ে সমকালীন ছবিগুলোর তুলনায় ‘ইজাজত’ যথেষ্ট এগিয়ে ছিল। আশা ভোসলের গাওয়া ‘ইজাজত’ ছবির ‘মেরা কুছ সামান’ গানটি আজও জনপ্রিয়। এই গানের জন্য গুলজার সেরা গীতিকার এবং আশা ভোসলে সেরা গায়িকা বিভাগে জাতীয় পুরস্কার জিতে নেন। এর পর ২০০০ সালে মুক্তি পায় টাবু অভিনীত ও মহেশ মঞ্জরেকর পরিচালিত হিন্দি-মারাঠি ছবি ‘অস্তিত্ব’। এই ছবির মূল বিষয়বস্তু বিবাহবহির্ভূত প্রেম, বধূ নির্যাতন এবং পুরুষতন্ত্র। ‘অস্তিত্ব’ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র অদিতি (টাবু) এবং শ্রীকান্তের বৈবাহিক সম্পর্ক সুখের ছিল না। এই ছবিতে দেখানো হয় অদিতি এবং তার সংগীত শিক্ষকের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক। যার জেরে অদিতি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সেই সময়ের বিচারে এই ছবি অনেকটাই এগিয়ে ছিল। ‘অস্তিত্ব’ সেরা মারাঠি ছবির বিভাগে জাতীয় পুরস্কারও পায়।