উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে ঘনঘন ভূকম্পনের ফলে জনমনে আতঙ্ক ঘণীভূত হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক, ৬ সেপ্টেম্বর।। রবিবার সকালে অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং শহর কেঁপে উঠেছে ভূমিকম্পে। ইদানীংকালে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে ঘনঘন ভূকম্পনের ফলে জনমনে আতঙ্ক ঘণীভূত হচ্ছে। বড় আকারের প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা তাড়া করছে অষ্টলক্ষ্মীর রাজ্যগুলোতে বসবাসকারী জনমানসে। ভূমিকম্পপ্ৰবণ অগ্নি বলয়ের অন্তৰ্গত হওয়ার জন্য এই অঞ্চলে ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের ঘটনার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন বহু অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব। আজকের ভুমিকম্পে কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

রবিবার সকাল ৭:৩০:০৫ (সাতটা তিরিশ মিনিট পাঁচ সেকেন্ড)-য় সংঘটিত মৃদু ভূমিকম্পের রিখটার স্ক্যালে তীব্রতা ছিল ৩.৪। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির খবর, ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল তাওয়াং জেলা থেকে ৪৫ কিলেমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে ২৭.৮৩° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২.২৪° পূর্বে।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ১ সেপ্টেম্বরও ভূমিকম্পে কেঁপেছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম পাহাড়ি রাজ্য মণিপুর। এদিন ভোররাত ২.৩৯ মিনিট নাগাদ হালকা তীব্রতার ভূকম্পন অনুভূত হয় মণিপুরে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৫.১। রাজ্যের উখরুল থেকে ৫৫ কিলোমিটার পূর্বে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।

গত ২৭ আগস্ট মিজোরামের চাম্ফাই জেলায় এক ঘণ্টার মধ্যে ৩.৬ থেকে ৫.৩ রিখটার স্ক্যালে পর্যায়ক্ৰমে তিনবার ভূমিকম্প অনুভুত হয়েছিল। মণিপুরের চান্দেল জেলায় গত ১১ আগস্ট ৪.০ প্ৰাবল্যের ভূমিকম্পের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছর প্রায় ২৩ বার ভূকম্পে কেঁপে উঠেছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য। গত ২ জুন ভারতীয় সময় সকাল ৭:১৪ মিনিটে ৩.৯ প্রাবল্যের ভূমিকম্প হয়েছিল মণিপুরে। সেদিনের ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল ওই রাজ্যের পূর্ব উখরুল জেলার ভূপৃষ্ঠের ১১ কিলোমিটার গভীরে। এর আগে ২৫ মে রাত ৮টা ১২ মিনিটে ৫.৪ তীব্রতার ভূমিকম্প হয়েছে অসম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরায়ও। সেদিনের ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলা এবং মায়ানমার সীমান্ত। এর পর ২১ জুন অসমের রাজধানী গুয়াহাটি সহ প্রতিবেশী মেঘালয়, মণিপুর এবং মিজোরামে মাঝারি তীব্রতার ভূমিকম্প হয়েছে বিকেল ৪:১৫ মিনিটে। ভূমিকম্পটির রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৫.১। এদিনের ভূকম্পনের উৎসস্থল ছিল মিজোরামের রাজধানী আইজল।

এভাবে গত ২২ জুন মাত্র বারো ঘণ্টার ব্যবধানে ফের মিজোরামে ভূমিকম্প হয়েছিল এদিন ভোর ৪:১০:৫২ মিনিটে। গত ১৮ জুন থেকে ছয়দিনে পঞ্চমবার ২৪ জুন মাঝারি ভূকম্পন হয়েছে মিজোরামে। ৩ জুলাইও ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে মিজোরাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকা। ৭ জুলাই গভীর রাত ১.৩৩ মিনিটে মৃদু ভূকম্পনে কেঁপে উঠেছিল অরুণাচল প্রদেশ। ১৪ জুলাই সকালে নাগাল্যান্ডের লংলেং জেলায় রিখটার স্কেলে সংঘটিত ভূকম্পের তীব্রতা ছিল ৩.৫। ১৭ এবং ২৫ জুলাই ফের মিজোরামে যথাক্রমে ৪.২ এবং ৩.৮ প্রাবল্যের ভূকম্পন হয়। ৮ আগস্ট মধ্য অসমের শোণিতপুর জেলায় ৩.৫ রিখটার স্ক্যালের ভূকম্পন অনুভূত হয়। ২৪ আগস্ট ৩,০ রিখটার স্ক্যালে অরুণাচল প্রদেশের আনজাও জেলায় ভূমিকম্প হয়েছে।

গত মাস-কয়েক থেকে উত্তরপূর্বে ক্ৰমাগত সংঘটিত ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্ৰীয় সরকারও চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফ থেকে উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলোতে ঘনঘন ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে বারবার সতর্কবার্তাও জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষও একইভাবে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে সময় সময় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করছে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?