অনলাইন ডেস্ক, ২৯ ডিসেম্বর।। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, তাদের নিখোঁজ দুই কর্মী মিয়ানমারের সেনাদের হামলায় নিহত হয়েছে। খবর বিবিসি।
সংস্থাটি জানায়, পূর্বাঞ্চলের কায়াহ প্রদেশে ৩৫টির বেশি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। যেখানে নারী ও শিশুরা রয়েছে।
সেনারা জোর করে তাদের গাড়িতে নামায়। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে এবং বাকিদের হত্যা করে মৃতদেহ পুড়িয়ে দেয়।
তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, তাদের দুই কর্মী সদ্য বাবা হয়েছেন, তারা শিশুদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করতেন। দাতব্য কাজ শেষে ছুটি তারা বাড়ি গিয়েছিলেন।
এর আগে সংস্থাটি জানায়, দুই কর্মী আক্রান্ত হয়েছে ও তাদের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এই টুইট বার্তায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে বিষয়টি অবহিত করে সেভ দ্য চিলড্রেন এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।
হামলার খবর প্রকাশের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, সেনাবাহিনীকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করারও আহ্বান জানান।
স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন গত ২৫ ডিসেম্বর হাপ্রুসো শহরের মো সো গ্রামের কাছে সেনাবাহিনীর হাতে নিহত বৃদ্ধ, নারী, শিশুসহ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের পোড়া মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়েছিল।
সংগঠনটি তাদের ফেসবুক পেজে এক বার্তায় বলেছে, ‘আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী অমানবিক ও নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। ’
ওই সময় মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বলেছে, সেনাবাহিনী ওই গ্রামে বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কয়েকজন ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে’ গুলি করে হত্যা করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ত্রধারীরা সাতটি গাড়িতে ছিলেন এবং সামরিক বাহিনীর নির্দেশের পরও তারা থামেননি। এ বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স।
তবে স্থানীয় কারেনি ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স জান্তাবিরোধী বেসামরিক মিলিশিয়াদের অন্যতম বড় সংগঠন। তারা বলেছিল, নিহত ব্যক্তিরা তাদের সদস্য নন, বরং সংঘাত থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয় নেওয়া বেসামরিক নাগরিক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই গ্রুপের এক কমান্ডার বলেছিলেন, ‘আমরা ভীষণ হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম— সব মৃতদেহই শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের। ’
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটির নির্বাচিত অং সান সু চি সরকারকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। সেই থেকে নোবেলজয়ী নেত্রী ও তার দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বন্দী আছেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে সাজা ঘোষিত হয়েছে।
সু চিকে বন্দী করার পর মিয়ানমার জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৩শ’র বেশি মানুষ মারা গেছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু রয়েছে। এ ছাড়া বন্দী আছে কয়েক হাজার মানুষ।