স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২০ ডিসেম্বর।। সামাজিক ব্যাধি দূরীকরণে ও ইতিবাচক জনমত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে সংবাদ মাধ্যমের। নেশার কবল থেকে খুব সম্প্রদায়কে মুক্ত রাখতে ও সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন পরিষেবা সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরীতে সংবাদ মাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম। আজ রাজধানীর সিটি সেন্টারে বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যম রাইজ ইস্ট ও কক খোরাং-এর উদ্বোধন করে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
উদ্বোধন শেষে তিনি চ্যানেল দুটির বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ নাগরিকদের প্রাত্যহিক জীবনের সাথে জড়িত ও সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সংবাদ মাধ্যম দ্বারা জনগণের সামনে উত্থাপন করা সম্ভব। সব অংশের মানুষের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নানা ধরণের অনুষ্ঠান সম্প্রচারের পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসংস্থান, সচেতনতা বাড়ানো এবং সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা সম্পর্কেও সাধারণ মানুষ অবহিত হতে পারবেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছেন এমন ব্যক্তি ও তার প্রকল্প সম্পর্কে যথার্থ প্রচারের মাধ্যমে উদ্যোগ বা কর্ম প্রত্যাশীদের সহায়তা করা সম্ভব। তার থেকে উৎসাহিত হয়ে অনেকেই উপার্জনের নয়া দিশা খুঁজে পাবেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজিক বিভিন্ন ব্যাধি সম্পর্কে জনজাগরণ তৈরী ও জনমত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের প্রতিভা বিকাশে এবং ক্রীড়াক্ষেত্রে সুযোগ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে রাজ্য সরকার। ক্রীড়াক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ সম্প্রসারণের দ্বারা যুব সম্প্রদায়কে সঠিক দিশায় পরিচালিত করতে সবার সজাগ দৃষ্টি থাকা প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সংবাদ মাধ্যমেরও। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জিমন্যাস্টিক ও ফুটবলকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তার পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, মহিলা ক্ষমতায়ণ সহ প্রবীণদের জন্যও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান পরিবেশনের পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্য যেন বিঘ্নিত না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। প্রকৃত ঘটনা সংবাদে প্রতিফলিত হওয়ার বদলে যদি সংবাদ মাধ্যমের অভিমত তাতে প্রভাব বিস্তার করে সেক্ষেত্রে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
সেক্ষেত্রে দায়িত্বশীল সংবাদ মাধ্যমগুলির দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি প্রতিটি জনপদের খবর পরিবেশনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সমস্ত দপ্তরকে নিয়ে ২০৪৭ সাল পর্যন্ত লক্ষমাত্রা স্থির করার কাজ শুরু করছে রাজ্য সরকার। তিনি আশা ব্যক্ত করেন জনকল্যাণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে জনমত গঠনে অগ্রণী ভূমিকা নেবে সংবাদ মাধ্যম।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে টি সি এ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা বলেন, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। গণতন্ত্রের গরিমা রক্ষার দায়িত্ব সবার। সমাজের দর্পণ রূপে মানুষের সামনে সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলি তুলে ধরতে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে সংবাদ মাধ্যম। গঠনমূলক সংবাদ পরিবেশন দ্বারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং সমস্যা নিরূপণের উপর দৃষ্টিপাত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অরুণ চন্দ্র ভৌমিক, আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, ডেপুটি মেয়র মণিকা দাস দত্ত, খাদি ও গ্রাম উদ্যোগ পর্যদের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্য, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক প্রণব সরকার প্রমুখ।