অনলাইন ডেস্ক, ২০ ডিসেম্বর।। যুক্তরাজ্যজুড়ে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ায় সরকারি নির্দেশনা না থাকলেও দেশটির বার-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো মালিকেরাই বন্ধ রাখছেন।
সিএনএন বিজনেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পেছনে কর্মীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ ছাড়াও ওমিক্রন সংক্রমণের ঝুঁকির কারনে একের পর এক রিজার্ভেশন বাতিল হতে থাকাও বড় কারন।
পশ্চিম লন্ডনের মঙ্গল-২ রেস্তোরাঁর সহপ্রতিষ্ঠাতা ফেরহাত ডিরিক বলেছেন, ‘বুকিং বাতিলের পাশাপাশি অনিশ্চয়তার কারণে পরিকল্পনার এক সপ্তাহ আগেই তিনি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ’
তিনি বলেন, ‘এটি কর্মীদের মনোবলের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
শুধু তা–ই নয়, এটি আমাদের ওপরও প্রভাব ফেলেছে। কারণ, এই অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রতিষ্ঠান খুলে রাখার পক্ষে ভালো ব্যবসা হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ’
প্রায় দুই বছর ধরে চলা করোনা মহামারির মধ্যে আবার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়াটা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ। পাশাপাশি এটি সরকারের জন্যও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে লাগাম টেনেছে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জমায়েত না করতে দেশটির নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের চিফ মেডিকেল অফিসার ক্রিস হুইটি।
দেশটির বর্তমান করোনা পরিস্থিতি সবাইকেই দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। ইতিমধ্যে অনেকেই রেস্তোরাঁ বা পানশালায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন। যুক্তরাজ্যে এবার বড়দিনের উৎসবে ভেন্যু সংরক্ষণ ২০১৯ সালের তুলনায় ২২-২৪ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে অনলাইনে রেস্তোরাঁ বুকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ওপেনটেবিল’।
একই সময়ে আন্তর্জাতিকভাবে এই হার কমেছে ১৫-১৮ শতাংশ।
পর্যটন খাতসংশ্লিষ্ট কর্মীরা করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সহকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। দক্ষিণ লন্ডনের ফরজা ওয়াইনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ব্যাশ রেডফোর্ড বলেন, তার ৩১ জন কর্মীর মধ্যে ইতিমধ্যে ২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সংস্পর্শে এসেছেন বুধবার সকাল পর্যন্ত এমন আটজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বড়দিনের আগেই বুধবার প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ওমিক্রন নিয়ে বার-রেস্তোরাঁর পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও একই পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। লন্ডনের থিয়েটার সোসাইটিও গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, সাধারণত বড়দিনে টিকিট বিক্রি অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু থিয়েটার–সংশ্লিষ্ট অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় এবার প্রদর্শনী বাতিল করতে হচ্ছে। এটি আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য ভেন্যুগুলোকে একধরনের সংশয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
ওয়াল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১২ লাখ ৭৯ হাজার ৪২৮ জন। অপর দিকে গত বৃহস্পতিবার এক দিনে যুক্তরাজ্যে ৮৮ হাজার ৩৭৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, করোনার ডেলটা ধরন তুলনামূলক স্থিতিশীল হলেও ওমিক্রন খুব দ্রুত বাড়ছে। লন্ডনে ওমিক্রন ইতিমধ্যেই প্রভাব বিস্তারকারী ধরন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।