অনলাইন ডেস্ক, ১৭ ডিসেম্বর|| এবার স্বেচ্ছামৃত্যু তথা আত্মহত্যার বৈধতা দিল মধ্য ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়া। স্বেচ্ছামৃত্যুর বৈধতা দিয়ে শুক্রবার অস্ট্রিয়ার সংসদে একটি নতুন বিল পাস হয়েছে। ওই বিলে স্বেচ্ছামৃত্যুকে বেশ কিছু কঠোর শর্তসাপেক্ষে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
নতুন আইন অনুসারে, অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ মানুষ শর্তসাপেক্ষে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করতে পারবেন।
নতুন পাস হওয়া এই আইনের নাম অ্যাসিসটেড সুইসাইড অ্যাক্ট। সেখানে বলা হয়েছে, ১৮ বছরের বেশি বয়সীরাই কেবল স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করতে পারবেন। তবে তাদেরই এই অনুমতি দেওয়া হবে, যারা প্রাণঘাতী কোনো অসুখে মৃত্যুপথযাত্রী কিংবা কোনো অসুখে পড়ে ভয়ঙ্কর দুর্বল হয়ে পড়েছেন, যা আর ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
কেউ স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেল দুই জন চিকিৎসক তার আবেদন বিচার করে দেখবেন। রোগী আসলে নিজেই মৃত্যুর পথ বেছে নিচ্ছেন কি না, তাও বিচার করে দেখবেন তারা।
অসুস্থ কোনো মানুষ সাময়িক সংকটে কাতর হয়ে এই আবেদন করেছে কি না, তা পর্যালোচনা করতে অন্তত ১২ সপ্তাহ সময় নেবেন চিকিৎসকরা। তবে অসুস্থতার কারণে যে রোগীর অদূর ভবিষ্যতে মৃত্যু হতে পারে, তার আবেদন পর্যালোচনা করতে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ সময় নেবেন চিকিৎসকরা।
যিনি স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করতে চান, তাকে আইনজীবীর কাছে বা নোটারির কাছে জানাতে হবে যে, তিনি ওষুধ খেয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু চান।
সম্প্রতি অস্ট্রিয়ার সাংবিধানিক আদালত জানিয়েছেন, স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ না করতে দেয়া মানবাধিকার ভঙ্গের সামিল।
তারপরই এই নতুন আইন করা হচ্ছে।
এর আগে সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, স্পেন এবং লুক্সেমবার্গে স্বেচ্ছামৃত্যুর বৈধতা দেওয়া হয়েছে। সুইজারল্যান্ডে বিদেশিরাও গিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করতে পারেন। জার্মানি ও ফ্রান্সে আদালত স্বেচ্ছামৃত্যুকে আইনসঙ্গত করলেও সরকার কোনো আইন করেনি। পর্তুগালের পার্লামেন্ট বিল পাস করলেও দেশটির প্রেসিডেন্ট সেই বিলে সম্মতি দিতে রাজি হননি।
কিছুদিন আগে যন্ত্রণাহীনভাবে স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য একটি যন্ত্রের অনুমোদন দিয়েছে সুইজারল্যান্ড। কফিন আকৃতির ওই যন্ত্রে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে আর কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে বেদনাহীন মৃত্যু ডেকে আনা যাবে। যন্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সারকো’।