স্টাফ রিপোর্টার, বিশালগড়, ৩ সেপ্টেম্বর।। গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত ছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম দায়িত্ব পালন না করায় চড়িলাম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের দুপুরের বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার স্কুলে যাবার সময় এক ছাত্রকে একটি মারুটি গাড়ি ধাক্কা মেরে চলে যায়। মারুতি অল্টো গাড়িটি পালিয়ে যায়।
ছাত্রটি দীর্ঘক্ষন জাতীয় সড়কের পাশে পড়ে থাকে। ছাত্রটির নাম সুব্রত সেনগুপ্ত । বয়স ১ বছর । পিতার নাম দুলাল সেনগুপ্ত। ছাত্রটি চড়িলাম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ে। ছাত্রটি স্কুল ড্রেস পড়ে বাইসাইকেলে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে চড়িলাম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে যাবার সময় বিদ্যালয় থেকে মাত্র ছয় হাত দূরত্বে মারুতি গাড়িটি ধাক্কা দেয়।
বুড়ামা মন্দিরের সামনেই জাতীয় সড়কে গাড়ি ধাক্কা মারে বলে জানা গেছে। ছেলেটির পা কেটে যায় ।হাতে পায়ে বুকে মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা পায়। উরুর মাংস অনেকখানি কেটে যায় ।অনেক রক্তক্ষরণ হয়। সাইকেল এর কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়।দীর্ঘক্ষন সড়কের পাশে পড়ে ব্যথায় কাতরাতে থাকে। স্কুলের সামনে ঘটনা।
অথচ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ছাত্র-ছাত্রী কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষ পর্যন্ত ছাত্রটির গ্রামের দুইজন লোক ছাত্রটিকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে তড়িঘড়ি একটি গাড়ি নিয়ে ছাত্রটিকে বিশ্রামগঞ্জ প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর দেয়া হয় ছাত্রটির মা রত্না দাস সেনগুপ্তকে। ছাত্রটির মা তখন কাজে ছিলেন। খবর পেয়ে ছুটে চলে যান বিশ্রামগঞ্জ প্রাথমিক হাসপাতাল।
গিয়ে ছেলের এই অবস্থা দেখে চিৎকার করে কান্না করতে থাকেন। ছাত্রটির মা অত্যন্ত গরীব। কখনো রাজমিস্ত্রির জুগালি কাজ ,কখনো রেগার কাজ ,কখনো পরের বাড়িতে অনুষ্ঠানে রান্নাবান্নার কাজ ,যখন যেই কাজ পান সেই কাজ করেন।
কঠোর পরিশ্রম করে সন্তানকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। ছাত্রটির বাবা সারাক্ষণ নেশায় মত্ত থাকে। যার ফলে স্বামীর সঙ্গে থাকেন না রত্না এবং তার সন্তানরা। কাজ করে পরিশ্রম করে সংসার প্রতিপালন করছে রত্না।
বিশ্রামগঞ্জ প্রাথমিক হাসপাতলে চিকিৎসা করিয়ে বিকেল পাঁচটার সময় ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। সারারাত্র ব্যথায় ঘুমোতে পারেনি সুব্রত। অথচ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা একটিবারের জন্যও খোঁজ খবর নেননি বলে জানিয়েছেন ছাত্রটির মা।
ছাত্রটির বাইসাইকেল এবং স্কুল বেগ কোথায় রয়েছে, না হারিয়ে গেছে সেটাও বলতে পারছেন না রত্না। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো স্কুলে যাবার সময় স্কুলের পাশেই এই ঘটনা অথচ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা বলছেন স্কুলের সামনে ঘটনা হয়নি।
তাই তারা খোঁজখবর নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। অথচ ছাত্রটির দুর্ঘটনায় স্কুলের ড্রেস পর্যন্ত ছিড়ে গিয়েছে। অতীতে কোন ছাত্র-ছাত্রী যদি অসুস্থ হত কয়েকদিন স্কুলে না আসতো তাহলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিতেন।
সেই জায়গায় স্কুলের সামনে গাড়ির ধাক্কায় রাস্তার পাশে কাতরাচ্ছে স্কুলছাত্র। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুল থেকে বেরিয়ে এসে খোঁজখবর নেওয়া এবং দেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি।এতটা অমানবিক হতে পারে শিক্ষক-শিক্ষিকারা?
ছাত্রটির বাড়ি চড়িলামের আড়ালিয়া গ্রামের রাজিব কলোনি এলাকায়। ছাত্রটির মা বিশালগড় থানায় অলটো গাড়ির নম্বর দিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এখন দেখার বিষয় পুলিশ এই অল্টো গাড়িটিকে আটক করতে পারে কিনা?