স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৫ আগস্ট।।
রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে এখন স্বরোজগারী মানসিকতা গড়ে উঠেছে। এর প্রকৃত প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয় গত তিন বছরের ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের সাফলো। গত তিন বছরে বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম এক লাভজনক সংস্থায় পরিণত হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের তিন বছরের সাফল্য সম্পর্কিত পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
তিনি বলেন, ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের বহুবিধ যুগান্তকারী পদক্ষেপের পাশাপাশি ত্রিপুরা চায়ের গুণগতমান বৃদ্ধি পাওয়ায় বহিরাজ্যের নিলাম বাজারে সর্বোচ্চ ২৭৪ টাকা প্রতি কেজি দরে নিগমের চা পাতা বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, এই করোনা অতিমারীর মধ্যেও নিগমের চা বাগানগুলির শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে নিগম চা শ্রমিকদের নগদ মজুরি ১০৫ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৩১ টাকা করে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ৫৪টি বড় চা বাগান রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু ক্ষুদ্র চা বাগান। এই চা শিল্পকে পাথেয় করে ক্ষুদ্র চা চাষীরাও আজ লাভজনক অবস্থায়ক রয়েছে।
ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনার ফলে আজ বড়মাত্রায় ক্ষুদ্র চা চাষীরা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম ত্রিপুরা চায়ের প্রচার ও প্রসারের জন্য নতুন লোগো, টি কর্নার চালু করা সহ আরও বহুবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা চা শিল্পের ক্ষেত্রে নতুন গতি এনেছে।
তিনি বলেন, রাজ্যে পর্যটনের বিকাশে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। টি ট্যুরিজমের উন্নয়ন বা এই ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার কর্তৃক নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কলাও মুখ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, পর্যটন এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে মানুষের ভালো একটা রোজগারের সুযোগ রয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকার প্রাথমিক ক্ষেত্রের উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে। এরমধ্যে চা অন্যতম একটি ক্ষেত্র। সরকার রাজ্যের চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে সচেষ্ট বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা চা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা বলেন, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণার ফলে করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতেও ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে চা শিল্পকে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নিগম সহ এর সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যে বর্তমানে ১৮৩১টি ন্যায্যমূল্যের দোকানের মাধ্যমে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের ত্রিপুরেশ্বরী চা বিক্রি করা হচ্ছে।
পাশাপাশি তিনি বলেন, কোভিড অতিমারী পরিস্থিতিতেও ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চা উৎপাদন বেড়েছে। পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে সার্বিক টার্নওভারও। স্বয়ম্ভরতার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ত্রিপুরার চা রপ্তানির জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আশাবাদী ভবিষ্যতে ত্রিপুরার চা বাংলাদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।