স্টাফ রিপোর্টার, আমবাসা/ আগরতলা, ৩ আগস্ট।। স্বাধীনতা দিবসের আগে ধলাই জেলায় ছাওমনু থানার অন্তর্গত ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে আরসি নাথ বিওপি এলাকার জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে দুই বিএসএফ কর্মী শহীদ হয়েছেন।
শহীদ জওয়ানরা হলেন হলেন এসআই ভুরু সিং এবং কনস্টেবল রাজ কুমার। জঙ্গীরা দুই বিএসএফ কর্মীর কাছে থেকে ১টি বারেটা, ১টি ম্যাগজিন, ১৬টি গুলি, ১টি একে ৪৭ রাইফেল সহ এই রাইফেলের একটি ম্যাগজিন ও ৩০টি গুলি নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টা নাগাদ ছামনুর মানিকপুর থানার সীমান্তবর্তী গ্রাম আরসি নাথ পাড়াতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আজ ধলাই জেলার মানিকপুর থানার অন্তর্গত আরসি নাথ বিওপি এবং জলাবস্তি বিওপির মাঝামাঝি এলাকায় সাতসকালে টহলরত বিএসএফ জওয়ানদের উপর হামলা চালায় সন্দেহভাজন এনএলএফটি জঙ্গিরা।
এই অতর্কিত হামলায় বিএসএফের সাব-ইন্সপেক্টর ভরু সিং এবং কনস্টেবল রাজকুমার প্রথমে রক্তাক্ত হন এরপর তারা শহীদ হন । জানা গেছে বিএসএফ জওয়ানরা আরসিনাথ বিওপি এবং জলাবস্তি বিওপির মাঝামাঝি এলাকায় টহলরত ছিলেন ,তখনেই জঙ্গল থেকে অতর্কিত হামলা চালায় জঙ্গিরা ।
জঙ্গিদের হামলায় এই দুইজন জওয়ান ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরলেও পাল্টা জবাব দেন এদের সঙ্গীরা এতে জঙ্গিদের কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনার পরই নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ দল জঙ্গী বিরোধী চিরুনি তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ।
সীমান্ত এলাকায় পেট্রোলিং-এর দায়িত্ব পালনের সময় সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণে দু’জন বি এস এফ জওয়ানের নিহত হবার ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক বললেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। তিনি বলেছেন, বি এস এফ ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ারের দেওয়া প্রেস রিলিজ থেকে জানা গেছে ধলাই জেলার অন্তর্গত ছাওমনু থানা এলাকায় আজ সকাল সাড়ে ছয়টায় এই ঘটনা ঘটেছে।
নিহত জওয়ানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তাঁদের সহকর্মী এবং পরিবার পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এই ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। সন্ত্রাসবাদী শক্তির পুনর্গঠনের প্রবনতা ও আক্রমণ জনিত কার্যকলাপ প্রতিহত করতে ত্রিপুরা সরকারের দিক থেকে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
আজ ধলাই জেলার লংতরাইভ্যালী মহকুমার গোবিন্দবাড়ী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বি এস এফ জওয়ানদের ওপর বিচ্ছিন্নতাকামী সন্ত্রাসবাদী বাহিনী এন এল এক টি’র আক্রমণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং এ আক্রমণের তীব্র নিন্দা করছে।
এ আক্রমণে ২ জন জওয়ান নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন। দুটি আগ্নেয়াস্ত্র সন্ত্রাসবাদীরা তুলে নিয়ে গেছে। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী নিহত দেশপ্রেমিক জওয়ানদের আত্মীয়-পরিজনদের গভীর শোক জানাচ্ছে, আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে।
সি পি আই (এম) বেশ কয়েকটি সংবাদ সম্মেলনে রাজ্যের পূর্ব সীমান্তবর্তী এলাকায় এন এল এফ টি সন্ত্রাসবাদীদের তৎপরতা এবং আরও কিছু যুবককে সন্ত্রাসবাদের বন্ধ্যা পথে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরাপত্তা জোরদার করতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য আরক্ষা বাহিনী ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে।
কিন্তু এ সতর্কতা গুরুত্ব দেয়া হয়নি। বরং কয়েকটি টি এস আর ব্যাটেলিয়নকে রাজ্যান্তরে পাঠানো হয়েছে। রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী সীমান্ত সুরক্ষিত করতে যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার কাজ দ্রুত শেষ করতে এবং টি এস আর ব্যাটেলিয়ন ফিরিয়ে আনা, শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানাচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি ভেঙ্গে দিতে সে দেশের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের দাবি জানাচ্ছে।