অনলাইন ডেস্ক, ২৭ জুলাই।। শিগগিরই ২০ বছরের যুদ্ধক্ষেত্র আফগানিস্তান ছেড়ে যাচ্ছে মার্কিন সেনাবাহিনী। এবার এলো ইরাক ছাড়ার ঘোষণা। খবর বিবিসি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক ঘোষণায় জানান, চলতি বছরের শেষ দিকে ইরাকে সমাপ্ত হবে তাদের কমব্যাট মিশন। তবে ইরাকি সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ অব্যাহত থাকবে।
বাইডেন ও ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাদিমি সোমবার একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন, যা অনুষ্ঠানিকভাবে ২০২১ সালের শেষ নাগাদ ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র অভিযানের সমাপ্তি ঘটাবে। ১৮ বছরের বেশি সময় আগে ইরাকে প্রবেশ করে মার্কিন বাহিনী।
এটাই ছিল ওভাল অফিসে বাইডেন ও কাদিমির প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকের মধ্যে কৌশলগত আলোচনার অংশ হিসেবে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বর্তমানে সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএসের অবিশিষ্টাংশকে মোকাবিলায় ইরাকি বাহিনীকে সাহায্য করছে আড়াই হাজারের মতো মার্কিন সেনা।
তবে প্রশিক্ষণের জন্য ইরাকে প্রায় একই সংখ্যক মার্কিন সেনাই থেকে যাবে, যাকে দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করার পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত বছর বাগদাদে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানি শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও ইরান সমর্থিত এক শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতাকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। আইএসের হুমকি থাকা সত্ত্বেও এই ঘটনার পর ইরান সমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলো ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সেনাদের প্রত্যাহারের দাবি তোলে।
ইতিমধ্যে শিয়া যোদ্ধারা ইরাকি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে কয়েকশ রকেট, মর্টার ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। একে জোট বাহিনীকে ইরাক ছেড়ে যাওয়ার জন্য চাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নতুন ঘোষণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের ছায়াযুদ্ধ নতুন মোড় নিল। এ মাধ্যমে সাধারণ ইরাকিদের ভাগ্যে কী পরিবর্তন ঘটবে সেটা সময়ই বলে দেবে।
এ দিকে হোয়াইট হাউসে বাইডেন তার ইরাকি প্রতিপক্ষকে বলেন, আমরা নতুন পর্বে যাওয়ার পরও সন্ত্রাস-বিরোধী সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
জবাবে আল খাদিমি বলেন, আমাদের সম্পর্ক এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে জোরালো। অর্থনীতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অনেক কিছুতে আমাদের সহযোগিতা রয়েছে।
এ কথায়ও জোর দেন, ইরাকে কোনো যুদ্ধরত বিদেশি সেনার প্রয়োজন নেই।
২০০৩ সালে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসাইন সরকারকে উৎখাত ও বিধ্বংসী অস্ত্র ধ্বংসের অজুহাতে ইরাক আক্রমণ করে মার্কিন বাহিনী। যদিও এ ধরনের অস্ত্রের সন্ধান কখনো পাওয়া যায়নি।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট বুশ ‘মুক্ত ও শান্তিপূর্ণ ইরাকের’ প্রতিশ্রুতি দিলেও শান্তি কখনো ফিরে আসেনি। বরং যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের বড় একটি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে দেশটিকে খণ্ড-বিখণ্ড করেছে।