অনলাইন ডেস্ক, ১৯ জুলাই।। ব্রিটনি স্পিয়ার্স সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ বার্তায় জানিয়ে দিলেন, যত দিন তার বাবা জেমস পারনেল স্পিয়ার্স তার ‘পোশাক থেকে শুরু করে ভাবনা-চিন্তা-কথা বলা’ নিয়ন্ত্রণ করা বন্ধ না করছেন, তিনি আর গান গাইবেন না।
প্রায় ১৩ বছর ধরে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের জীবনযাত্রা ও আর্থিক সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন জেমস। সম্প্রতি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে কনজারভেটরশিপ আইনের বিরুদ্ধে নতুন আইনজীবী নিয়োগ করেছেন ব্রিটনি। আর তার পরদিনই সামাজিক মাধ্যমে এই কথা জানিয়ে দিলেন পপ তারকা।
গ্র্যামি-জয়ী ব্রিটনি লেখেন, কনজারভেটরশিপ বা তাকে নিয়ন্ত্রণের এই আইন সব স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে, নতুন করে আর কোনো গান লেখার ক্ষমতা তার নেই।
ইনস্টাগ্রামে ব্রিটনি লিখেছেন, “একগাদা মেকআপ করে নিজের গানেরই রিমিক্স বারবার গাওয়া আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। আমার পছন্দ নয় আমার বোন আমার হয়ে কোনো অ্যাওয়ার্ড শো-তে যাবে আর আমার গানেরই রিমিক্স গাইবে। এই কনজারভেটরশিপ আমাকে মেরে ফেলেছে প্রায়… এখন শুধু মনে আশা আছে! এই আশাই যা মরতে চায় না!”
এর আগে আদালতে ব্রিটনি জানিয়েছিলেন, যত জলদি সম্ভব এই ‘অপমানজনক’ কেস শেষ করতে চান। যা তার মন ভেঙে দেয় ও দাসত্ব অনুভব করায়।
খোলা আদালতে বাবা ও যারা তাকে ‘নিয়ন্ত্রণ’ করছেন, তাদের নিন্দা করেন ব্রিটনি। জানান, ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ খেতে বাধ্য করেন তারা। এমনকি প্রেমিককে বিয়ে ও সন্তান নিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের আদালতের বিচারককে ব্রিটনি বলেছেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং দিনের পর দিন কেঁদেছেন। ‘আমি আমার জীবন ফিরে পেতে চাই’, জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও আদালতের পক্ষ থেকে ব্রিটনির বাবার সপক্ষেই রায় দেওয়া হয়। এরপর নতুন আইনজীবী নিয়োগ করে ফের আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি।
গত ১৩ বছর ধরে ব্রিটনি কনজারভেটরশিপের আওতায় আছেন। আমেরিকার আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির মানসিক, শারীরিক এবং বয়সজনিত সমস্যা থাকলে তাকে কনজারভেটরশিপের আওতায় আনা যায়। এ ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির অর্থ, সম্পত্তি এবং অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একজন তত্ত্বাবধায়ক থাকবেন। ২০০৮ সালে আমেরিকার আদালত ব্রিটনির বাবা জেমসকে এই দায়িত্ব দেয়। ওই সময়ে মানসিক দিক থেকে ব্রিটনি একেবারেই দুর্বল অবস্থায় ছিলেন।
ঠিক তার আগেই গায়িকার দ্বিতীয় বিয়েও ভেঙে যায়। স্বামী কেভিন ফেডারলাইন তাদের দুই ছেলের যাবতীয় দায়িত্ব পান। তার পরেই ব্রিটনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। জেমসই এত দিন ব্রিটনির সব দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু নানা বিষয়ে ব্রিটনির সঙ্গে তার বাবার সংঘাত বাধে। ২০১৯ থেকে কনজারভেটরশিপ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন গায়িকা।
কিন্তু নিজের আচরণের ফাঁদেই ব্রিটনি বারবার জড়িয়ে পড়েছেন। রাস্তায় আইন ভাঙা থেকে শুরু করে মানসিক অবসাদ, নেশা… ইত্যাদির কারণে বাবার নিয়ন্ত্রণ থেকে তিনি মুক্তি পাননি। এই আইনি লড়াইয়ে ম্যাডোনা, মাইলি সাইরাস, প্যারিস হিলটন শুরু থেকেই পপস্টারের পাশে রয়েছেন অগণিত ভক্ত।