অনলাইন ডেস্ক, ৩ জুলাই।। ইথিওপিয়ার টাইগ্রে অঞ্চলে চলমান লড়াইয়ে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ। সতর্ক করে এ কথা বলেছে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
এ সংকট নিয়ে ডাকা প্রথম বৈঠকে সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদ জানায়, ওই অঞ্চলের ৩৩ হাজারের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। কর্মকর্তারা জানান, আট মাস ধরে চলমান এ লড়াইয়ে আরও ১৮ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণা সত্ত্বেও সংঘাত আরও বাড়তে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। সোমবার ইথিওপিয়ার সরকার ওই অঞ্চলে একতরফা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। মূলত ফসলের মৌসুমকে সামনে রেখে এ ঘোষণা।
তবে সরকারি ঘোষণার পরও বসে নেই বিদ্রোহীরা। তারা ‘শত্রুদের’ তাড়িয়ে দেওয়ার ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছে সংঘর্ষের খবরও।
ইতিমধ্যে টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ) ও সরকারি বাহিনীর লড়াইয়ে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ২০ লাখেরও বেশি মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে।
সংঘাতের সব পক্ষের বিরুদ্ধেই গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার টাইগ্রের রাজধানী মেকেলেতে বন্দী কয়েক হাজার ইথিওপিয়ার সেনাকে দিয়ে সড়কে প্যারেড করানো করা হয়।
ওই দিন নিউইয়র্কে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘের হিউম্যানিটারিয়ান এইডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান জানান, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে টাইগ্রের পরিস্থিতির নাটকীয় অবনতি হয়েছ।
রামেশ রাজাসিংঘম বলেন, কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা হয়েছে এ অঞ্চলে। এখানকার ৫২ লাখ নাগরিকের মানবিক সাহায্য প্রয়োজন। তাদের বড় একটি অংশ নারী ও শিশু।
গত সপ্তাহে অভিযোগ ওঠে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে সাহায্য নিতে বাধা দিচ্ছে সরকারি বাহিনী। তবে তারা তা অস্বীকার করেছে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবি আহমেদ ২০১৮ সালে ক্ষমতা আসার পর ইথিওপিয়ার রাজনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটতে থাকে। প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দুই দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে তারই হাত ধরে। এই কারণে ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছরের মাথায় নোবেল শান্তি পুরস্কার পান তিনি।
প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারলেও নিজ দেশের স্বাধীনতাকামী অঞ্চল টাইগ্রেতে তিনি শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হন। উল্টো টাইগ্রের স্বাধীনতাকামীদের দমনে গত নভেম্বরে সেখানে তিনি সেনাবাহিনী পাঠান। এরপর থেকেই শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘাত।
এ দিকে সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে বিদ্রোহী বাহিনী টাইগ্রের অন্তবর্তী প্রশাসন দখলে নিয়েছে বলে জানা গেছে। শহরটি বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মেকেলবাসী সরকারি বাহিনীর চলে যাওয়াকে উদযাপন করছেন বলেও জানা গেছে।
এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার সেখানে যে অন্তবর্তী সরকার নিয়োগ দিয়েছিল তাদের সকলে শহর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। একজন মানবাধিকার কর্মকর্তা খবরটি নিশ্চিত করেছেন।