নতুন প্রতিনিধি, কৈলাসহর, ২০ জুন।। করোনার প্রকোপে গোটা বিশ্বে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে। এরই মাঝে ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীর সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্যই লকডাউন-কে কৃতিত্ব দিতে হচ্ছে। কারণ, ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের বাসিন্দা মাফিক আলী স্ত্রী বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়ে ফুটফুটে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। লকডাউনে আটকে যাওয়ার কারণেই ওই শিশু-র বাংলাদেশে জন্ম হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই, বাংলাদেশের সাথে তার নাড়ির টান গড়ে উঠেছে, তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। স্ত্রী-সন্তান ত্রিপুরায় ফিরে এসে আনন্দে আত্মহারা মাফিক আলী বলেন, লকডাউন আমাদের জীবনে ঐতিহাসিক মুহুর্ত হিসেবে সারাজীবন মনে গেঁথে থাকবে। মাফিক আলী-র কথায়, এক পুত্র সন্তান এবং অন্তঃস্বত্বা স্ত্রী-কে নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ গিয়েছিলাম। মৌলভীবাজারে ফরিদপুর আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লকডাউনে আটকা পরে যাই। এরপর থেকে সেখানেই আটকে ছিলাম। দীর্ঘ চেষ্টার পর চট্টগ্রাম সহকারী হাই কমিশনের সহায়তায় ত্রিপুরা ফায়ার এসেছি। তিনি বলেন, চিকিৎসক-দের অনুমান অনুযায়ী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সন্তানের জন্ম হওয়ায় তারিখ স্থির হয়েছিল। কিন্তু, ২৪ মে বাংলাদেশে তার প্রসব যন্ত্রনা শুরু হয়। তখন সেখানেই একটি নার্সিং হোমে তাকে ভর্তি করি এবং পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তাঁর কথায়, ভারত থেকে বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়ে ত্রিপুরায় ফেরার জন্য শুধু লকডাউন-র কারণে বিভিন্ন জায়গায় ছুটাছুটি করতে হয়েছে। তাছাড়া, সেখানে কোন অসুবিধা হয়নি আমাদের। সন্তানের জন্মের সময় হাসপাতালে যথেষ্ট ভাল পরিষেবা পেয়েছি। তিনি বলেন, সদ্যজাত সন্তানের জন্মের প্রমাণপত্র সংগ্রহে কিছুটা দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে। কারণ, ওই নথি ছাড়া তাকে নিয়ে ভারতে ফিরে আসা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে চট্টগ্রাম সহকারী হাই কমিশনের সহায়তায় সদ্যজাত সন্তানের জন্য ইমার্জেন্সি সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি। ওই নথি দেখিয়ে গত ১৮ জুন আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট দিয়ে ত্রিপুরায় ফিরে এসেছি। তাঁর কথায়, এখন স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তান নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক একান্তবাস কেন্দ্রে ভালই আছি। শুধু, বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় রয়েছি।