স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১১ জুন।। দেশের অর্থনৈতিক মানোন্নয়নে প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকারও আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে তুলতে কৃষি, উদ্যান, মৎস্য, প্রাণী সম্পদ পালন ও বনভিত্তিক উন্নয়নের এই প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কিষাণ রেলের মাধ্যমে বর্হিরাজ্যে উৎপাদিত ফসল রপ্তানির সুযোগ পেয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন রাজ্যের কৃষকগণ। আজ বাধারঘাট রেলস্টেশন থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রথম কিষাণ রেলের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। রাজ্য থেকে আনারস এবং কাঠাল নিয়ে দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এই ট্রেনটি। সবুজ পতাকা নেড়ে কিষাণ ট্রেনের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ।
উল্লেখ্য, আজ যে কিষাণ ট্রেন আগরতলা থেকে রওনা হল সেই ট্রেনে দিল্লির আদর্শনগর যাচ্ছে ৮,৯৯০ কেজি আনারস এবং গুয়াহাটি যাচ্ছে ১,১৪৫ কেজি আনারস ও কাঠাল। কিষাণ ট্রেনের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ কৃষি প্রধান।
মন কি বাত অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার কাঠালের উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই কিষাণ রেল শুরু হওয়ার ফলে খুব কম খরচে ত্রিপুরার কাঠাল, রাজ্য ফল ক্যুইন আনারস খুব সহজেই দেশ-বিদেশের বাজারে পৌঁছে যাবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে কিষাণ রেল পরিষেবা তার অন্যতম সংযোজন।
এরফলে রাজ্যের কৃষকদের উৎপাদিত ফসল শুধুমাত্র স্থানীয় বাজার নয় বর্হিরাজ্য ও আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে যাবে। তিনি বলেন, একটা সময়ে রাজ্য থেকে বিমান পথে বা সড়ক পথে পণ্য রপ্তানি খরচ ছিল অনেক বেশি। যাতে লাভের মুখ দেখতেন না কৃষকগণ। এখন কিষাণ রেলের মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল প্রতি কেজি ২ টাকা ২৫ পয়সা পরিবহণ খরচে দিল্লি পৌঁছে যাবে।
গৌহাটি পর্যন্ত প্রতি কেজি পরিবহণ খরচ পড়বে মাত্র ৮৮ পয়সা। এরফলে লাভের মুখ দেখবেন রাজ্যের কৃষকগণ। রাজ্য থেকে কিষাণ ট্রেনের পরিষেবা চালু করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পিয়ুষ গোয়েলকে ধন্যবাদ জানান।
https://www.facebook.com/bjpbiplab/videos/183055470299476/
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কিষাণ ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ায় রাজ্যে উৎপাদিত লেবু, ধান, কাজু, ড্রাগন ফল, কাশ্মীরি কুল, আনারস, কাঠাল সহ বিভিন্ন উৎপাদিত ফসলের উন্নত দাম পাবেন কৃষকগণ। এখন করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বাজার বন্ধ থাকায় পণ্য রপ্তানি কিছুটা কম হওয়া স্বাভাবিক।
তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই রাজ্যের উৎপাদিত বিভিন্ন ফল ও ফসল রপ্তানি বাড়বে বলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি বর্তমানে ড্রাগন ফল, কাশ্মীরি আপেল কুল সহ অন্যান্য ফলের চাষ হচ্ছে। কিষাণ রেল চালু হওয়ার ফলে সমস্ত অংশের চাষিরাই এর সুফল পাবেন।
https://www.facebook.com/bjpbiplab/videos/173103444686123/
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের কল্যাণে কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন রাজ্যের ২ লক্ষ ৩২ হাজার কৃষক। প্রতি বছর ৬ হাজার টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কিষাণ সম্মাননিধি যোজনার সফল বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বর্হিরাজ্যে পাঠানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ায় কৃষি মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়কেও ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক ও বিধায়ক মিমি মজুমদার।